নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগী পীরের দরবারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জের বন্দরে দেওয়ানবাগী পীরের দরবারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দেওয়ানবাগী পীরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও জলসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁর অনুসারীরা। এ সময় দেওয়ানবাগ জামে মসজিদের মুসল্লিরা বাধা দিলে পীরের অনুসারী মুসল্লিরা ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে আজ ফজরের নামাজের পর আশপাশের মসজিদে ঘোষণা দিয়ে দেওয়ানবাগী পীরের দরবারে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। এ সময় স্থানীয় লোকজন দরবারের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। পরে দুটি টিনের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগী পীরের দরবারে শুক্রবার সকালে হামলা, ভাঙচুর করা হয়। শুক্রবার রাতে তোলা

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

শুক্রবার রাত নয়টার দিকে দেওয়ানবাগের দরবারে গিয়ে দেখা যায়, দেওয়ানবাগী পীরের দরবারের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। কিছু অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ও ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিরা অবস্থান করছেন। তবে দেওয়ানবাগের পীরের কোনো লোকজনকে দেখা যায়নি।

ফজরের নামাজের পর আশপাশের মসজিদে ঘোষণা দিয়ে দেওয়ানবাগী পীরের দরবারে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে তোলা

প্রধান ফটকের পাশে দেওয়ানবাগ জামে মসজিদ ও জামিয়াতুল সুহাদা দেওয়ানবাগ মাদ্রাসা। এ মসজিদ থেকেই বৃহস্পতিবার রাতে মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকার লোকজনকে আজ ভোরে অবস্থান নেওয়ার জন্য বলা হয়। মসজিদের ইমাম মাসুম বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এখানে বিতর্কিত ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড হতো। এ কারণে স্থানীয় তৌহিদি জনতা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ ছিল। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন প্রধান ফটকের সামনে অবস্থা নিলে তাঁরা (দেওয়ানবাগীর অনুসারীরা) ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পরে পুলিশ ও ছাত্রসমাজের লোকজন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে চেষ্টা করেও দেওয়ানবাগী পীরের দরবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সকালবিডির জেষ্ঠ প্রতিনিধিকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেওয়ানবাগী পীরের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের বিরোধ চলছিল। সে বিরোধের জেরে আজ ফজরের নামাজের পর মসজিদের মাইকে ঘোষণা করে স্থানীয় লোকজন দেওয়ানবাগী পীরের দরবারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!