মোঃকবির হোসেন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ বাঙালির আতিথেয়তার অন্যতম অনুসঙ্গ পান। বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান, পালা-পার্বণ, বিয়ে-সহ যে কোন আয়োজননে সব শেষে যেন পান থাকতে ইহবে। সেই ঘুম পাড়ানি মাসিপিসির ছড়ার মতো বলতে হয়, ‘বাটা ভরা পান দেবো,গাল ভরে খেয়ো’। গ্রাম বাংলা এমনকি শহরেওে বাঙালির অনেকেই খেয়ে থাকেন পান।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে এই প্রথম সেই পান চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মো.জহিরুল ইসলাম (৩৫)। সে নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের মৃত সরব আলীর ছেলে।
অন্যের দোকানে টেনলারিং এর কাজ কওে অভাব-অনটনে সংসার চলে তার। এক বন্ধুর সাথে পরামর্শ করে রাজশাহী থেকে মিষ্টি জাতের প্রায় ৫ হাজার পানের চারা এনে পরিতাক্ত বাড়ির পতিত জমিতে রোপন করেন।পান চাষ করেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি ও তার পরিবার। এখন শখের বসে গড়ে তুলা পানের বরজের পরিচর্যা করে দিন কেটে যায় তার। বরজের পান বিক্রি করেই স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে চলছে জহিরুলের সংসার।
জহিরুল ইসলাম জানান, নাগরপুর উপজেলায় তিনিই প্রথম পান চাষ শুরু করেন। রাজশাহী থেকে পানে ডগা এনে প্রায় ২৫ শতাংশ ভিটে বাড়ির পতিত জমিতে রোপন করেন।চারি দিকে পাট খড়ির বেড়া ও উপরে ছাউনি দিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে তার খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। কোন রকম সমস্যা দেখা দিলে রাজশাহী থেকে অভিজ্ঞ দুই একজন পান চাষি এনে তাদের পরামর্শ নেন। ৯ মাস পর থেকে পান তোলা শুরু করেন তিনি।স্থানীয় বাজার ছাড়াও রাজশাহীতে পান বিক্রি করতে নিয়ে জান জহিরুল। তবে পান চাষের জন্য জমি উপযোগী কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল তার। সেই সংশয় কাটিয়ে এখন সফলতার মুখ দেখছেন। কয়েক মাসেই পুরো খরচের টাকা উঠে আসে তার। এখন সে একজন সফল পান চাষি।
জহিরুল আরো বলেন, তার অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল না। তাই যদি উপজেলা প্রশাসন কিংবা কৃষি অফিস থেকে একটু সহযোগীতা পান তা হলে আরো বড় পরিসওে করবেন।
ভাতশালা গ্রামের সোলাইমান মাষ্টার ও প্রতিবেশী মো. মহসিন বলেন, আমাদের এলাকায় পান চাষ হবে এটা আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি। জহিরুলের সফলতা দেখে আমরাএলাকাবাসি খুবই খুশি।
নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন,নাগরপুর উপজেলায় পান চাষে জহিরুল ইসলাম একজন সফল উদ্যোক্তা। পান যেহেতু অর্থকরী ফসল । তাই কৃষি অফিস থেকে জহিরুল ইসলাম সহ যারা পান চাষে এগিয়ে আসবে তাদেও সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করা হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার