সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রানকেন্দ্র চাষাড়ায় অবস্থিত শহীদ জিয়া হলের উপরে থাকা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তা তৎক্ষণাৎ জানা যায়নি, তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমানকে দায়ী করেছেন।। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে জিয়া হলে জিয়াউর রহমানের ম্যুরালটি ভেঙে পড়ে থাকতে দেখা গেলে এ খবর মুহুর্তেই শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতারা।
এসময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, আমরা অত্যন্ত ব্যাথিত হতবাক ও ক্ষুব্ধ। এটা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই জিয়া হল নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসনের অধীনে রয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি যুদ্ধের পর বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি এ দেশকে রক্ষা করেছিলেন। তার নামে এ অডিটরিয়াম যেটা জিয়া হল নামে পরিচিত। এটি নিশ্চিহ্ন করে দিতে সরকারি দলের এমপি শামীম ওসমান সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন। এখানে তিনি অন্য কিছু করার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেছেন। আজকের এ ঘটনার মাধ্যমে প্রমানিত হয় এটা সরকারি দলের নীল নকশার মাধ্যমে শহীদ জিয়ার এ ম্যুরাল কেটে ফেলে দেয়া হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা।
এসময় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আজকে আমরা দেখেছি সংসদে দাঁড়িয়ে শামীম ওসমান একথা বলেছেন। শামীম ওসমান আজকে প্রমান করলেন তিনি আসলেই নারায়ণগঞ্জের গডফাদার। তিনি প্রতিহিংসাপরায়ন। সে শান্তিপূর্ণ কাজ করতে পারে না। রাতে অন্ধকারে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এ ম্যুরাল ভেঙে প্রমান করেছেন তিনি আসলেই সন্ত্রাসদের গডফাদার। তিনি শান্তিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জে উত্তেজিত করতে চায়। তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপি কতবার ক্ষমতায় ছিল। বঙ্গবন্ধু সড়কসহ কত জায়গায় তার ছবি আছে। তার দাদার নামে স্টেডিয়াম আছে, চুনকা পাঠাগার আছে। আমরা কোথাও হাত দেইনি। তিনি আজ যে কাজটা করলেন আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আগামী ৭২ ঘন্টায় ম্যুরাল যথাস্থানে না বসালে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীকে নিয়ে কর্মসূচি দিবো এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেব। আমরা জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে এমন কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই আমি তাকে বলতে চাই এমন কিছু করবেন না যেন নারায়ণগঞ্জ অশান্ত হয়। এ সরকারই শেষ সরকার নয়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেছেন, দিনে দুপুরে ব্যাংক ডাকাতি, দ্রব্য মুল্যের লাগামহীনতা, ঘুষ, দূর্নীতি, লুটতরাজ কিছুই তো বন্ধ করতে পারলেন না। শুধু ভোট ডাকাতি আর প্রকল্পের নামে লুটপাট করা ছাড়া। যাই হোক মানুষের আবেগ, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার জায়গায় আঘাত করে জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল সরিয়ে উনার নাম পরিবর্তন করে এখানে অন্যকিছু হয়তো ক্ষমতার জোরে এখন করতে পারবেন কিন্তু মানুষের অন্তর থেকে এ নাম কখনো মুছে ফেলা যাবেনা যা দিনদিন বাড়বে আর বেড়েই চলেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বেশ কিছুদিন যাবৎ জিয়া হল নিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন চাষাঢ়া বালুরমাঠে এক সমাবেশে ছয় দফা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শামীম ওসমানের পিতা একেএম শামসুজ্জোহা। সমাবেশটি বর্তমান জিয়া হল প্রাঙ্গণে হয়েছিল দাবী করে এ জায়গায় ছয় দফা মঞ্চ করার ঘোষণা দিয়েছেন শামীম ওসমান। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকেও তিনি অবগত করেছেন বলে জানান শামীম ওসমান।