আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যু নিয়ে যা বললেন চিকিৎসক
পাবনা প্রতিনিধি : মোঃ সবুজ হোসেন:
অনেকেই হয়ত বিশ্বাস করতে পারে পারেনি, কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য। এই সত্য যেন সবাইকেই নির্বাক করে দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর স্কয়ার হসপিটালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
স্কয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক মির্জা নাজিম উদ্দীন সাড়ে ১১টার দিকে আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যু সম্পর্কিত বিষয়ে ব্রিফিং করেন।
মির্জা নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটায় একটা হার্ট এ্যাটাক হয়। আইয়ুব বাচ্চুর গাড়ি চালক তার নিজস্ব গাড়িতে স্কয়ার হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসেন। আমরা তাকে মৃত অবস্থাতেই পাই। তারপরও আমাদের ইমার্জেন্সির স্পেশাল টিম যারা থাকে আমাদের, সেখানে তার যে কার্ডিয়াক কনসালটেন্ট মনসুর মাহবুব হোসেনের উপস্থিতিতে সর্বভাবে চেষ্টা করা হয় ওনাকে রিকভারি করার জন্য। কিন্তু ১৫-২০ মিনিট চেষ্টা করার পরও যখন দেখি তাকে আর ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না, তখন ৯.৫৫ মিনিটে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি।
তিনি আরো বলেন, ‘আইয়ুব বাচ্চু অনেকদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন, ওনার হার্টে ছিল কার্ডিওমাপ্যাথি। এর আগে একটা স্টিম করানো ছিল ২০০৯ এ। সপ্তাহ তিনেক আগে উনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার হার্টে কার্যকারিতা ছিল ৩০ শতাংশ।যেটা সাধারণ থাকে ৭০ শতাংশ, যেখানে তার ছিল ৩০ শতাংশ। যার জন্য বারবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছিলেন। আজ সকালেও একই ঘটনা ঘটে। সকালে আরেকটি হার্ট এ্যাটাক হয়। তার ড্রাইভারের কাছ থেকে জানা যায়, তার মুখ থেকে ফেনা বের হতে দেখা যায়। তার মানে হল হার্টের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে ওনার মুখ থেকে পানির মত জিনিস বের হচ্ছিল। কিন্তু যেহেতু উনি নিজের গাড়িতে আসছিলেন এ কারণে তিনি হাসপাতালে আসার আগেই রাস্তায় মারা যান। তারপরই আমাদের যথেষ্ট চেষ্টা করার পরও তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান।’
২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর বাচ্চু ফুসফুসে পানি জমার কারণে এর আগেও ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা গ্রহণের পর তিনি সুস্থ হন।
২০১৪ সালের ১৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘বিসিবি সেলিব্রেশন কনসার্ট’-এ অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন নিয়ে মাইলস ব্যান্ডের হামিন আহমেদের সাথে বাচ্চুর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই দ্বন্দ্বের সূত্রে বাচ্চু ও তার ব্যান্ড এল আর বি বাংলাদেশ ব্যান্ড মিউজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) সদস্যপদ প্রত্যাহার করে।
১৯৯১ সালে বাচ্চু এল আর বি ব্যান্ড গঠন করে। এই ব্যান্ডের সাথে তার প্রথম ব্যান্ড অ্যালবাম এল আর বি প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। পরে ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যান্ড অ্যালবাম সুখ ও তবুও বের হয়। ১৯৯৫ সালে তিনি বের করেন তৃতীয় একক অ্যালবাম কষ্ট। ২০০৯ সালে তার একক অ্যালবাম বলিনি কখনো প্রকাশিত। ২০১১ সালে এল আর বি ব্যান্ড থেকে বের করেন ব্যান্ড অ্যালবাম যুদ্ধ।
গিটারে তিনি সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বিখ্যাত। জিমি হেন্ড্রিক্স এবং জো স্যাট্রিয়ানীর বাজনায় তিনি দারুণভাবে অনুপ্রাণিত। আইয়ুব বাচ্চুর নিজের একটি স্টুডিও আছে। ঢাকার মগবাজারে অবস্থিত এই মিউজিক স্টুডিওটির নাম এবি কিচেন।