# দেবী_রিভিউ
স্রষ্টা যখন হুমায়ূন আহমেদ আর সৃষ্টিটা যখন বারবার পড়া, তখনই ছবিটা দেখার আগ্রহ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বইটা পড়ে যতটা এর গভীরে চলে গিয়েছিলাম, তেমনটা ছবিতে পাবো প্রত্যাশা করিনি। এর আগে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের কাজলের দিনরাত্রি ছবিটা দেখে হতাশ হয়েছিলাম। এতো সুন্দর একটা গল্পকে কিভাবে আবর্জনার স্তুপ করা যায়, পরিচালক সিদ্ধহস্তে দেখিয়েছেন। যদিও তারিন ভালো অভিনয় করে। কিন্তু এই ছবিতে মনে হয়েছিল তাকে জোর করে অভিনয়ে বাধ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেবী একেবারেই সফল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শকের আগ্রহ ধরে রাখার মতো যথেষ্ট মসলা ছিল। সবচেয়ে ভালো লেগেছে শবনম ফারিয়ার অভিনয়। নীলুকে ফুটিয়ে তোলার জন্য যা যা করা দরকার, সবটুকুই সে ঢেলে দিয়েছে। চঞ্চল চৌধুরীকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বহুবার প্রমাণিত সে। জয়া আহসানের অভিনয়ও চমৎকার। কিন্তু একটা মেয়ে আরেকটা মেয়ের সাথে কথা বলার সময়ও কামুক দৃষ্টিতে তাকাবে, ব্যাপারটা বেমানান লেগেছে। পুরো ছবিজুড়েই এই এক্সপ্রেশন অতিরিক্ত দেখা গেছে।
ভূতদের ডাকাডাকিগুলো ভৌতিক করতে গিয়ে কিছুটা হাস্যকর হয়ে গেছে। বিশেষ করে পুরুষ ভূতের কন্ঠ একেবারেই বেমানান ছিল। গল্পের রানুর মৃত্যু যতটা কষ্ট দিয়েছে, ছবিতে অতটা দাগ কাটতে পারেনি। ইরেশ জাকেরের মৃত্যুর দৃশ্যটা দেখে শাকিব খানের এক ছবির দৃশ্যের কথা মনে পড়ে গেল। যদিও ছবিটার নাম মনে নেই। এই শেষ দৃশ্যটা আরেকটু চমৎকার করা যেত। তবে সত্যি বলতে হতাশ নই। কিছু অসঙ্গতি বাদে আয়নাবাজির পর চমৎকার একটা কাজ দেখলাম। এটলিস্ট টাকাটা জলে যায়নি।
পরিশেষ, আমাদের দেশের ব্যবসাসফল ছবি মানেই ঢিসুম ঢিসুম মারামারি, একগাদা গান, বৃষ্টি ভেজা নায়ক নায়িকার কোমর দোলানো। কিন্তু আয়নাবাজি, দেবীর মতো সিনেমাগুলো ব্যবসাসফল হচ্ছে। মানে আমরা এই ঘরানার ছবি দেখতে অভ্যস্থ হচ্ছি। আশা করি, এদের হাত ধরেই চলচ্চিত্রে সুস্থতা ফিরবে