চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে ব্যাপক হারে। দিনে ও রাতে অসংখ্য অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও ক্রয়-বিক্রয় চলছে।
সেখানে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকায় বিপুল অর্থ রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার,। অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ করতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার নির্দেশ দেয়া হলেও তা কার্যক্রর হয়নি।
বন্ধ হয়নি অবৈধভাবে বালি উত্তোলন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে তীব্র ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, প্রস্তাবিত ইকোনমিক জোন ও প্রস্তাবিত হাইটেক পার্কসহ চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়ি-ঘর ও ফসলী জমি। সেই সাথে গেল প্রায় দেড় দশক যাবৎ ক্ষমতার পালাবদল কিংবা এমপি-মন্ত্রী বদল হলেও বন্ধ হয়নি অবৈধ বালু উত্তোলন।
জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার নদীতে এবং মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দী থেকে ষাটনল পর্যন্ত মেঘনা নদী থেকে একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে তারা।
এ নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে। গেলো দেড় দশকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের প্রতিবাদ করার মতলবে সাবেক জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান আজহার উদ্দিনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। বালি উত্তোলনকারীদের ধরতে যেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্যকেও প্রাণ দিতে হয়েছে। সেই সাথে বিভিন্ন গ্রুপের আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে প্রাণ গেছে ২জনের।
বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আগামীতেও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও প্রাণহানীর আশংকা রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ অসাধু কিছু ড্রেজার বালু ব্যবসায়ী ক্ষমতাধর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ম্যানেজ করে এসব বালু উত্তোলন করছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
সরজমিনে দেখা যায়, অবৈধভাবে প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘন্টাই ৩০-৩৫টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর তা শত শত ভলগেড, কার্গো ও ট্রলার দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে ।
যে চক্রটি বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে তাদের এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি বা অনুমোদন নেই। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার বালু । পেশী শক্তির বলে সিন্ডিকেট টি অবৈধ ভাবে বালু বিক্রি করে আসছে এ জন্য বৃহত্তর মতলববাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ, তীব্র অসন্তোষ ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
ইতোপূর্বে মাঝে মাঝে নামকাওয়াস্তে কিছু অভিযান হলেও অবৈধ এই কাজ বন্ধ হয়নি।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান , অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদেও বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করে আসছে । গেলো এক বছরে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন ।
অন্যদিকে চাঁদপুর নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকেও নির্দেশ এসেছে । আশা রাখছি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।