গাজীপুরে ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে চাকায় পিষ্ট করে এক যাত্রীকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে।
রোববার (৯ জুন) সকালে সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যাত্রীর নাম সালাউদ্দিন (৩৬)। তিনি ঢাকার আলুবাজার এলাকার মৃত শাহাবউদ্দিনের ছেলে। সালাউদ্দিন বাঘেরবাজার এলাকায় পরিবারসহ বাসা ভাড়ায় থেকে স্থানীয় একটি কারখানার গাড়ি চালাতেন।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হুসেন বাংলানিউজকে জানান, শ্বশুর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে আলম এশিয়ার একটি বাসে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন সালাউদ্দিন। তিনি নিজে চালক পরিচয় দিয়ে ভাড়ার কিছু টাকা কম রাখার জন্য কন্ডাকটরকে অনুরোধ করেন। কিন্তু এ নিয়ে বাসের কন্ডাকটর ও হেলপারের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।
পরে সালাউদ্দিন বাসের ভাড়া পরিশোধ করলেও বিতণ্ডার জেরে বাসের কন্ডাকটর ও হেলপার বাঘেরবাজার গিয়ে তাকে ‘সম্মান’ দেখানোর হুমকি দেন। সালাউদ্দিন অপমানের আশঙ্কা থেকে তার ভাই জামাল উদ্দিনকে মোবাইল ফোনে বাঘেরবাজার বাসস্ট্যান্ডে আসতে বলেন। এক পর্যায়ে বাসটি বাঘেরবাজার পৌঁছালে দুই যাত্রী নামার পর সালাউদ্দিনও নামতে যান।
তখন বাসের কন্ডাকটর ও হেলপার তাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় এবং সালাউদ্দিনের স্ত্রীকে বাস থেকে না নামিয়ে গাড়ি টান দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সালাউদ্দিন ও তার ভাই জামাল উদ্দিন বাসের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গতিরোধের চেষ্টা করলেও চালক বাস না থামিয়েই সালাউদ্দিনকে পিষে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সালাউদ্দিন মারা যান। কিছু দূর যাওয়ার পর সালাউদ্দিনের স্ত্রীকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। আরও কিছুদূর গিয়ে বাসটি মহাসড়কের পাশে রেখে চালক, কন্ডাকটর ও হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
ওসি দেলোয়ার জানান, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে সালাউদ্দিনের ছোট ভাই জামাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ঈদের ছুটিতে স্ত্রীকে নিয়ে সালাউদ্দিন ময়মনসিংহের ফুলপুরে শ্বশুর বাড়ি যান। সেখান থেকে গাজীপুরে ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন তিনি।
জামাল উদ্দিন বলেন, আলম এশিয়ার ওই বাসে ভাড়া নিয়ে কন্ডাকটরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় আমার ভাইয়ের। বাসটি বাঘেরবাজার এলাকায় এলে কন্ডাকটর হেলপার আমার ভাইকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। ভাবীকে বাস থেকে নামানোর জন্য বাসের সামনে দাঁড়িয়ে গতিরোধের চেষ্টা করলে চালক আমার ভাইকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে আমার ভাই ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার