প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ২:৩০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ২৪, ২০১৯, ৯:০২ অপরাহ্ন
থামছেই না গণপিটুনি
রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেণুকে পিটিয়ে হত্যায় মূল হোতা হৃদয়কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ছাড়া এ হত্যার ঘটনায় আরও দুই আসামিকে চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। রেণুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্তত ১৬ জনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেণুকে পিটিয়ে হত্যায় মূল হোতা হৃদয়কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ছাড়া এ হত্যার ঘটনায় আরও দুই আসামিকে চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। রেণুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্তত ১৬ জনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে
চট্টগ্রামে সন্তানসহ মাকে ছেলেধরা সন্দেহে পিটুনি, গাজীপুরে স্বামীকে ফাঁসাতে গিয়ে মার খেলেন স্ত্রী, বাড্ডায় মাকে হত্যার মূলহোতা আটক
চট্টগ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে মাকে মারধর
রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেণুকে পিটিয়ে হত্যায় মূল হোতা হৃদয়কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ছাড়া এ হত্যার ঘটনায় আরও দুই আসামিকে চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। রেণুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্তত ১৬ জনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি থামছেই না। গতকালও দেশের বিভিন্ন জেলায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন নিরীহ লোকজন। চট্টগ্রামে নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন এক মা।
সিরাজগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবক, পটুয়াখালীতে এক নারী, ঢাকার নবাবগঞ্জে দুই যুবক ও মাদারীপুরের শিবচরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। গাজীপুরের শ্রীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে একে অন্যকে ‘ছেলেধরা’ আখ্যায়িত করে চিৎকার দিলে গণপিটুনির শিকার হন স্বামী-স্ত্রী। এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণপিটুনিতে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ লাখ ও আহতদের ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে ‘প্রতিবন্ধী নাগরিক ঐক্য’ মানববন্ধন করেছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- ঢাকা : রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেণুকে পিটিয়ে হত্যার মূল হোতা হৃদয়কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-পূর্ব) অতিরিক্ত উপকমিশনার আসাদুজ্জামান।
আজ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে গতকাল বিকালে গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে হৃদয় সন্দেহে এক যুবককে আটক করা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। পরে জানা যায়, ওই যুবকের নাম আল আমিন। এদিকে গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেণুকে হত্যার ঘটনায় আরও দুই আসামিকে চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এ দুই আসামি হলেন কামাল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার ইন্সপেক্টর আবদুর রাজ্জাক আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। রেণুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্তত ১৬ জনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে গণপিটুনির ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে স্কুলশিক্ষার্থীরা। কমে এসেছে স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যাও। এর আগে গ্রেফতার চারজনের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম : নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন এক মা। পরে কয়েকজন যুবকের সহায়তায় একটি দোকানে ঢুকে কোনোমতে প্রাণে বাঁচেন মা সালমা জাহান। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বন্দর থানার ইপিজেড ২ নম্বর পকেট গেট মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। জানা যায়, ছেলেধরা সন্দেহে এক পথচারী ওই নারীকে মারধর করে। একপর্যায়ে কয়েকজন যুবকের সহায়তায় জে এফ মেডিকেল হল নামে পাশের ফার্মেসিতে ঢুকে পড়েন ওই নারী। জনতা দোকানের ভিতর ঢুকেও তাকে মারধরের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে ওই নারীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সালমা জাহান একটি গার্মেন্টের সুইং অপারেটর। নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে কাজে বের হয়েছিলেন। সিরাজগঞ্জ : ছেলেধরা সন্দেহে আলম (৩৫) নামে এক যুবককে গণপিটুনির পর পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। গতকাল ভোরে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকপাড়া দারুল কোরআন কওমি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। আহত আলম পৌর এলাকার গয়লা বটতলা মহল্লার আবদুর রহিমের ছেলে। পটুয়াখালী : ছেলেধরা সন্দেহে জেলার কলাপাড়ায় এক নারীকে (৩৫) পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। বেলা ১২টার দিকে উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের জয় বাংলা বাজারে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হলে ওই নারীকে আটকে করে পুলিশে দেওয়া হয়। নবাবগঞ্জ : ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে সাথী আক্তার (২০) ও আনিসুর রহমান (২৮) নামে দুজনকে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ জনতার গণপিটুনি থেকে উদ্ধার করেছে। মাদারীপুর : ছেলেধরা সন্দেহে শিবচরে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধকে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ বৃদ্ধকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। গাজীপুর : পারিবারিক কলহের জেরে একে অন্যকে ‘ছেলেধরা’ বলে চিৎকার করার পর গণপিটুনির শিকার হয়েছেন স্বামী-স্ত্রী দুজনই। গতকাল বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী রিকশায় ছিলেন। সঙ্গে স্বামীর এক বন্ধুও। এ সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লাগে। পরে তা তুমুল আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে স্ত্রী লাফ দিয়ে রিকশা থেকে নেমে ‘ছেলেধরা’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। স্বামীও স্ত্রীকে উদ্দেশ করে ‘ছেলেধরা’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। পরে লোকজন ছেলেধরা সন্দেহে দুজনকেই পিটুনি দেয়। ধামরাই : ঢাকার ধামরাইয়ে ছেলেধরা গুজবে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ছয়জনের ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে গতকাল প্রত্যেককে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। ধামরাইয়ের কৃষ্ণনগর গ্রামের ফজল হকের ছেলে ওমানপ্রবাসী আবুল কালামকে (২৭) রবিবার রাত ১১টার দিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছেলেধরা বলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
টাঙ্গাইল : কালিহাতীতে ছেলেধরা সন্দেহে মিনু মিয়া (৩০) নামের এক ভ্যানচালককে গণপিটুনির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন মাইনুল হক হিটু, প্রভাত চন্দ্র মালু, শিশির আহম্মেদ খান, মিজানুর রহমান তালুকদার, ওমর ও আলামিন ইসলাম।
পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) : ছেলেধরা সন্দেহে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ইন্টারনেট কর্মীকে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগে সোমবার রাতে চাঁদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।
বগুড়া : গাবতলীতে ছেলেধরা সন্দেহে চার যুবককে গণপিটুনি দিয়ে তাদের ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই চার যুবককে উদ্ধার করতে গেলে জনগণের রোষানলে পড়ে থানার কনস্টেবল মো. সাগর আহত হন।
কুষ্টিয়া : ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনায় কুষ্টিয়ায় প্রায় ৪৫০ জনকে আসামি করে দুটি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ৩৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
রাঙামাটি : রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরা গুজবে কান না দিতে মাইকিং করা হচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার
সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত @ সকালবিডি ২৪ ডট কম । বিনা অনুমতিতে লেখা কপি বেআইনি