বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে ছাড়াই সংগঠনের জরুরি প্রেসিডিয়াম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১১ অক্টোবর শুক্রবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সংঠনটির কার্যালয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ।
বৈঠক থেকে যুবলীগের দফতর সম্পাদক পদ থেকে কাজী আনিসুর রহমান আনিসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, আনিসকে বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও আসন্ন কংগ্রেস নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেহেতু চেয়ারম্যান বৈঠকে ছিলেন না। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে।
সূত্রমতে, বৈঠকে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যরা চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, চেয়ারম্যানকে নিয়ে পত্রপত্রিকায় নানা রকম খবর বেরিয়েছে। তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই তিনি উপস্থিত থাকেননি। দলের জাতীয় কংগ্রেসেও তিনি হাজির হতে পারবেন না। তাহলে আমাদের বিকল্প পথ দেখতে হবে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী চেয়ারম্যানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
এসময় প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান আতা, মাহবুবুর রহমান হিরণ, ও মো. ফারুক হোসেন অভিন্ন সুরে বলেন, যেহুতু তিনি নেই, তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে কেন পারবো না? ব্যক্তির দায় সংগঠন বহন করতে পারে না। তিনি উপস্থিত না হলে কাউকে তো সভাপতিত্ব করতে হবে। তার নামে নানা ধরনের সংবাদ সংগঠনের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এসময় আলতাফ হোসেন বাচ্চু বলেন, যেহুতু তিনি নেই, তাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। কিন্তু আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান তো এখনো বহাল রয়েছেন। তার বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারি।
এসময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুবুর রহামন হিরণ বলেন, আনিসের মাধ্যমে টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় কমিটি দিয়েছেন চেয়ারম্যান। এতে বিএনপি-জামায়াত স্থান পেয়েছে। এ ব্যাপারে আপনি (সাধারণ সম্পাদক) নিরব থেকেছেন। আপনি নেত্রীর কাছে গিয়ে বলতে পারতেন। আপনি তা করেননি। এসময় অনেকেই সাধারণ সম্পাদককে দোষারোপ করেন।
ব্যাংক হিসাব তলব ও অনুমতি ছাড়া বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকে প্রকাশ্য আসছেন না যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। যোগ দিচ্ছেন না সাংগঠনিক কোনো কর্মকান্ডে। তবে গত ৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে তাকে গণভবনে দেখা গেছে। এর পর থেকেই তিনি বাইরে আসেননি। ধানমন্ডির বাসভবনেই তিনি আছেন বলে সূত্র জানায়।
যুবলীগের সম্মেলনের সভাপতিত্ব কে করবেন জানতে চাইলে অধ্যাপক এ বি এম আমজাদ হোসেন বলেন, এটির দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি যা বলবেন তাই হবে। বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক সভাপতিত্ব করেছেন।
প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ আতিয়ার রহমান দিপু বলেন, বৈঠক চেয়ারম্যানের অনুমতিতেই হয়েছে। তিনি কেনো আসেননি তা জানা নেই। তিনি কোথায় আছেন কেউ জানি না। চেয়ারম্যানের পদের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এ পদটির মালিক প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহিদ সেরনিয়াবাত, শেখ শামসুল আবেদীন, আলতাব হোসেন বাচ্চু, মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মো. ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরন, আবদুস সাত্তার মাসুদ, মো. আতাউর রহমান, বেলাল হোসাইন, আবুল বাশার, মোহাম্মদ আলী খোকন, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার নিখিল গুহ, শাহজাহান ভুইয়া মাখন, ডা. মোখলেছুজ্জামান হিরু প্রমুখ।