সুমনা কবি নজরুল সরকারি কলেজ প্রতিনিধি:
পুরান ঢাকার বুকে ১৪৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী কবি নজরুল সরকারি কলেজটিতে ছিলো না কোন ক্যান্টিন। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন কলেজের ১৭ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সম্প্রতি এ সমস্যা সমাধানে ক্যান্টিনের উদ্যোগ নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
প্রতিটি শিক্ষার্থীর দিনের অধিকাংশ সময় কাটে ক্যাম্পাসে । ঢাকা, কালিগঞ্জ,যাত্রাবাড়ি,নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা এ কলেজে লেখাপড়া করতে আসেন। এতে করে দীর্ঘ সময় ধরে না খেয়ে তাদেরকে ক্লাস করতে হয় এবং বাহিরে অবস্থান করতে হয়। সামান্য কিছু নাস্তা করার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে যেতে হতো কলেজের বাইরের বিভিন্ন রেস্তোরায়, ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে।
স্বাস্থ্যকর খাবারের এবং যথেষ্ট টাকার অভাবের কারণে বাধ্য হয়েই নিম্নমানের খাবার খেয়ে সময় পার করে দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার মধ্যে রয়েছে- ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকান হতে পাওয়া নিম্নমানের তেলে ভাজা অস্বাস্থ্যকর খাবার ফুচকা, সিঙ্গারা, সমুচা ইত্যাদি। এ সকল খাবার মুখরোচক হলেও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা এসব খাবার খেতে নিষেধ করলেও নিরুপায় হয়ে কলেজে ক্যান্টিন না থাকায় শিক্ষার্থীরা ছুটছে সেসব খাবার খেতে। ফলে আনেক সময় তাদের স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে। আবার কখনও খাবার গ্রহণ না করেই ক্লাস অথবা পরীক্ষা চালিয়ে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ বেশ কিছুদিন যাবৎ ক্যান্টিনের জন্য কাজ করে আসছিলো। অবশেষে আগামী ৬ অথবা ৭ নভেম্বর এ ক্যান্টিনের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষের ক্যান্টিন তৈরির উদ্যোগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আনন্দিত। এইচএসসি’র প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাসের ভেতরেই থাকতে হয় আমাদের। আমার পরিবারে মা-বাবা দুজনই কর্মজীবী, কাজেই কলেজে আসার সময় না খেয়ে আসতে হয়। কলেজে ক্যান্টিন না থাকায় খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছে, বাহিরের যাবার অনুমতি না থাকায় না খেয়ে কাটাতে হতো পুরোটা দিন। এখন ক্যান্টিন উদ্বোধনের পর আর এ সমস্যা হবে না।
ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ফরহাদ বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে কোনো ক্যান্টিন ছিলো না। আমরা অধ্যক্ষ স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আমাদের জন্য ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করেছেন। খাবার খেতে আর বাইরে যেতে হবে না। আমরা কলেজের ক্যান্টিনেই কম দামে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারবো।
ক্যান্টিনের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, আমি এটিকে ক্যান্টিন বলতে চাই না। পর্যাপ্ত রুম না থাকায়, বর্তমান ক্যান্টিটি একটি পরীক্ষামূলক উদ্যোগ মাত্র। সাধারণ শিক্ষার্থীদের খাদ্য সমস্যার প্রাথমিক সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। খাদ্যের মান ও মূল্য শিক্ষার্থীদের চাহিদাসহ বিভিন্ন দিক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এটির পরবর্তী দিক নিশ্চিত করা হবে। তবে ক্যান্টিনটি সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২:৩০ পর্যন্ত খোলা থাকবে।