ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উর্দু, ফার্সি, সংস্কৃত ও পালি- এ চারটি বিভাগ রাখার যৌক্তিতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময়ে এসব বিষয়ের প্রাসঙ্গিকতা ছিল। বর্তমান সময়ে এগুলো প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। এসব বিষয়ের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও বিভাগ হিসেবে থাকার প্রয়োজন একেবারেই নেই।
তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো বিভাগ হিসেবে থাকা উচিত না, এগুলো ল্যাংগুয়েজে চলে যাক। যখন পাকিস্তান ছিল তখন উর্দু শিখত, এখন উর্দু শিখে কী করবে? উর্দু শিখে তারা সেটার অনুবাদও করতে পারছে না। ফার্সি বিভাগের শিক্ষার্থীরা নাকি পরীক্ষায় বাংলায় লেখে। পালি, তারাও কিচ্ছু জানে না, সংস্কৃতও কিচ্ছু জানে না।
শিক্ষার্থীরা অজ্ঞাতবশত এসব বিষয়ে পড়তে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী খারাপ রেজাল্ট করার পর হয়তো এখানে শুধু ভর্তির চান্স পেয়েছে। তাকে ওখানটায় দেওয়া হলো—সংস্কৃতি। সে জানেও না সংস্কৃতি নামে একটা ল্যাংগুয়েজ আছে। তারপরেও যখন সে পড়তে আসছে, সে কী পড়ে বের হচ্ছে? আদৌ এসব বিষয় অনার্স লেভেলে, মাস্টার্স লেভেলের মানে পড়ানো হচ্ছে কি না। আমরা কি সেই লেভেলে পড়াচ্ছি ওদের? আমাদের শিক্ষকও নেই, আমরা ওদের পড়াচ্ছিও না। তাহলে কেন শুধু শুধু এই বিষয়গুলোকে ওই লেভেলে একটি ডিপার্টমেন্ট করে রাখা হবে। এটি হওয়া উচিত না।’
এ দিকে শিক্ষার্থীদের অনেকেই বলছেন অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা এসব বিভাগে ভর্তি হন। উদ্দেশ্য কোনোভাবে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা।
ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স পেয়েছি। সেখানে আরও ভালো বিষয় নিয়ে পড়তে পারতাম। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব বলেই এখানে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু দিন শেষে কী পাচ্ছি বা পাব সেটা আমার জানা নেই। ভর্তি হওয়ার সময় এসব মাথায়ও ছিল না। শুধু ঢাবি এটাই ছিল মূল ভাবনা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ডিন ও অধ্যাপকরাও এই চার বিভাগ রাখার পক্ষে না। তারাও মনে করেন, এসব নিয়ে এখন কথা বলার সময় এসেছে। বিভাগগুলো বাতিল কীভাবে করা যায় এবং এসবের জায়গায় নতুন বিভাগ খোলা যায় কি না, সেটাও কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার