নিউজ ডেস্কঃ
এদিকে,তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। রোববার ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ভোট হবে আগামী ৩০ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিন ৩১ ডিসেম্বর।
২ জানুয়ারি যাচাই-বাছাই এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ৯ জানুয়ারি। ১০ জানুয়ারি প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ এবং ওইদিন থেকেই শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার। দুই সিটিতে এবার ভোট হবে ইভিএমে। প্রার্থী হতে হলে বর্তমান মেয়রদের পদত্যাগ করতে হবে।
তবে কাউন্সিলররা নিজ পদেই থেকে নির্বাচন করতে পারবেন। এদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে পুরোদমে কাজ শুরু করবে বড় রাজনৈতিক দলগুলো। যদিও আগে থেকেই তারা প্রাথমিক প্রস্তুতি সেরে রেখেছে।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই সিটিতে বিএনপির প্রার্থী প্রায় চুড়ান্ত হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। ঢাকার উত্তরে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম থাকলেও দক্ষিণে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজধানীবাসীর সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে উত্তর-দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এর প্রায় চার বছর পর দুই সিটিতে নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক ও মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর মারা যান ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হক। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটির উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে বিজয়ী হন ব্যবসায়ী নেতা মো. আতিকুল ইসলাম। ৭ মার্চ শপথ নেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে প্রার্থী পরিবর্তনের গুঞ্জন শোনা গেলেও এবারও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। সাঈদ খোকনের সাফল্য-ব্যর্থতার পাল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তার প্রয়াত পিতা ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের নাম। সাঈদ খোকন ছাড়াও দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন আরও একাধিক নেতা।
আলোচনায় রয়েছেন, সাবেক আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য এবং বর্তমান আইন সম্পাদক লিগ্যাল এইড এডুকেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ও সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নুর তাপস।
তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে ১/১১-এর নেত্রী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা নজীবউল্লাহ হিরুকে নিয়েই আলোচনা হচ্ছে সব থেকে বেশি। স্বচ্ছ রাজনৈতিক দর্শন আর ক্লিন ইমেজের কারণে হিরুই হতে পারেন আগামীতে আওয়ামী লীগের দক্ষিণ সিটির কাণ্ডারি।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ও লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী নজীবউল্লাহ হিরু ইতোপূর্বে বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নেতাকর্মীদের ধারণা, ক্লিন ইমেজ, অতীতের সাফল্য ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে এবার যোগ্য প্রার্থী হয়ে ওঠতে পারেন অ্যাডভোকেট কাজী নজীবউল্লাহ হিরু।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম দায়িত্ব পালনের খুব কম সময় পেয়েছেন। আগামীতে তার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে জানা গেছে।
এছাড়াও পরিবর্তন হলে, প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর পরিচালক ,জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং নারী উদ্যোক্তা, সমাজকর্মী সিস্টার হেলেনা জাহাঙ্গীর এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হকও।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে এমন সিদ্ধান্ত থাকায় যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাই সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের ব্যাপারে নতুন করে খোঁজখবর নিচ্ছে দলের হাইকমান্ড। সাংগঠনিক দক্ষতার পাশাপাশি ব্যক্তি-জনপ্রিয়তা দেখা হচ্ছে। প্রার্থী করা হলে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ভালো ও মন্দ দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিদ্বিন্দ্বতাপূর্ণ এই নির্বাচনে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী বেছে নেবে আওয়ামী লীগ। সিটি নির্বাচনে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।