সেদিনের পুতুল বউ তোমার সোনাবউ
শিউলি হক
জানো প্রিয়
তোমার পুতুল বউ আগুনের পরশ পাথরের কষাঘাতে কলন্ক মাখতে মাখতে পোড়া মাটির মত পোড়ে পোড়ে ইট পাথরের সাথে মাখামাখি করে লাল বেনারসি ছেড়ে সাদাশাড়িতে জড়িয়ে অন্ধকারে ভালবাসার হাতছানিতে পাথর হয়ে উঠে,
একটু ছুঁয়ে দেখ; তোমার পুতুল বউয়ের তুল তুলে হাত আজ লোহায় আর্বিত রেশমি চুড়ি নেই হাতে জড়িয়ে,
সারাদিন খেটে খেটে শক্ত হয়ে জমে আছে তোমার চুমু মাখা পায়ের গোড়ালি, জড়ানো নেই আজ আর পায়েল খানি, তুমি যে লম্বা লম্বা চুলে তেল মাখিয়ে আদরে আদরে গল্প শুনিয়ে চিড়ুনী করে লাল নীল ফিতায় ফুলে ফুলে সাজিয়ে দিতে সেই চুল হারিয়ে গিয়েছে মাথা থেকে, মাথায় চেপে বসেছে রাতের আধারে একজাক নির্ঘুম ভাবনা, আজ আর তোমার পুতুল বউ এক পেচের শাড়ি পড়ে বলে না , আমাকে বেড়াতে নিয়ে যাও দোল খেতে খেতে বাদাম খাব, আজ তোমার পুতুল বউ, যুদ্ধা হয়ে উঠেছে জীবন নামের রেলগাড়িটার দায়িত্ব নিয়ে। কত কষ্ট নিয়ে অপেক্ষা, কেউ এসে মুছিয়ে দেয় না চোখের জল, একপলক দেখে যে যার যার মত চলে যায়, কৌতূহল করে কেউ কেউ শুনতে চায় পুতুল বউয়ের জীবনের প্যাচালী। কত শেখড়ের মাখামখি পুতুল বউয়ের চারিপাশে কলন্ক মাখাতে, নিজেকে নিষ্কলন্ক করতে অবিরাম ছুটে চলে যুদ্ধ করতে কিন্তু তারা তো বুঝে না পুতুল বউয়ের চোখের জলের ভাষা।
চাঁদের কিরন ছাড়া যে আলো জলে না তারা তা বোঝে না,কখনো অতলে ডুবিয়ে দেয় আবার কখনো টেনে তুলে,বার বার শেখড়ে জড়াতে চায় মনগড়া সুখ নিয়ে,মিথ্যে মালা পড়িয়ে দেয় স্বপ্নে পুতুল বউকে।
নিত্য নতুন স্বপ্ন বোনে, নতুন আসায় দিন গোনে দুঃখ সুখের পথের বাঁকে
একই উপাখ্যান বারবার শুনতে শুনতে একদিন ঢলে পরে এক মুসাফিরের সোহাগের উষ্ণতায় , পাথর থেকে বরফে জমাট হয়ে কাদামাটির প্রলেপ মাখিয়ে সাফসুতরো নিষ্কলঙ্ক না হয়ে কলন্ক মাখিয়ে ভালবাসার বেড়াজালে হয়ে উঠে পুতুল বউ থেকে সোনাবউ।
তোমার অপেক্ষায়