পুরান ঢাকার বুকে ঐতিহ্যবাহী কবি নজরুল সরকারি কলেজ। দেশের শতবর্ষী ষোলোটি কলেজের মধ্যে অন্যতম একটি কলেজ ।এই কলেজটির রয়েছে অনেক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। কিন্তু বর্তমানে এর হালচাল কেমন ! শিক্ষার্থীরা কেমন ক্যাম্পাস চায়?চলুন তাদের কাছ থেকেই জানি তারা কেমন ক্যাম্পাস চায়...?
মো. মেহেদী হাসান তিনি অনার্স তৃতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের ছাত্র। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় নতুন বছরে আপনি কবি নজরুল কলেজকে কেমন দেখতে চান উত্তরে তিনি বলেন- ক্যাম্পাসকে আমি নতুন বছরে নতুন ভাবে বরন করে নিয়েছি।ক্যাম্পাস থেকে আমার আগামী দিনের চাওয়া নৈতিক ও আধুনিক যুগোপযোগী একটি ক্যাম্পাস গড়ে তোলা।যেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যা গুলো সমাধান করে সামনের দিকে কীভাবে ভালো একটি ক্যাম্পাস উপহার দেওয়া যায় এটাই আমার কামনা। কলেজে বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে যেমন ছাত্রলীগ, সাংবাদিক সমিতি,বিএন সি সি সহ প্রত্যেকটি সংগঠনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ক্যাম্পাসকে সুন্দর ভাবে পরিচালনায় সহায়তা করবে এবং ক্যাম্পাস থেকে ভালো কিছু উপহার দিবে এটাই আমার কামনা।
এছাড়া নবীন শিক্ষার্থী যারা ভর্তি হবেন তাদের উদ্দেশ্যে বলব ছোটদের স্নেহ করা এবং বড়দেরকে সম্মানের মাধ্যমে তাদেরকে নতুন আঙ্গিকে পরিপূর্ন হওয়াটা আমার প্রত্যাশা।
শেখ ফারহান আহমেদ বলেন আমি বলতে চাই নতুন বছরে ক্যাম্পাসের পরিবেশ যেন শান্তি ও সুশৃঙ্খল বজায় থাকে।যাতে আমরা আমাদের পড়াশোনা সঠিক ও সুন্দরভাবে চালিয়ে যেতে পারি। এজন্য আমাদের ছাত্র সমাজ ও শিক্ষকদের যৌথ উদ্যোগে একসাথে শান্তি পূর্ণ একটি পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।আমরা আশা করি, এভাবে চালিয়ে গেলে ভবিষ্যতে কলেজের উন্নয়ন ও বৃদ্ধি পাবে।
যায়েদ হোসেন মিশু বলেন সুশিক্ষার জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিবেশ। পরিবেশটা যদি ভালো না থাকে তাহলে মনোযোগ মনোনিবেশ করতে পারব না। আমাদের ক্লাসে বসার জন্য যে বেঞ্চ গুলো রয়েছে ও গুলো ভালো দিতে হবে, কেননা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যা দেখা যায়। যেমন:বেঞ্চ ভেঙে যায়, ফ্যান চলে না,ইলেকট্রিসিটির প্রবলেম দেখা যায়।আমাদের ক্যাম্পাসের কমনরুম গুলো আরও বেশি আপডেট করা প্রয়োজন। পাশাপাশি খেলাধুলার জন্য মাঠের সংস্করণ সহ বিজ্ঞান সম্মত পড়াশোনার জন্য সাইন্স ল্যাব দরকার। এটাই আমাদের কাম্য।
সবুজ হোসেন বলেন আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে মেয়েদের জন্য একটি হোস্টেল দরকার। কারণ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা অনেক দূর থেকে যাতায়াত করে,যার ফলে অনেকে নিয়মিত ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকতে পারে না কিংবা নিয়মিত ক্লাস করতে পারে না। যার কারনে পরীক্ষায় তাদের রেজাল্ট খারাপ হয়ে থাকে। যদি কলেজে মেয়েদের জন্য একটি নারী হোস্টেল থাকত তাহলে এ সমস্যার সমাধান হতো। এছাড়াও মেয়েদের জন্য পৃথক ওয়াশ রুমের দরকার, কিন্তু এখানে সে ব্যবস্থা নেই, বরং ছেলে মেয়ে কম্ভাইন করা।এতে করে আমাদের মেয়েদের কষ্ট ভোগ করতে হয়।আমাদের মেয়েদের যে কমনরুমটা রয়েছে সেটা খুব ছোট এবং তেমন সুন্দর নয়।যদি এটা সুন্দর ও বড় করার ব্যবস্থা করা হতো তাহলে ভালো হতো।
মো.শাহীন বলেন আমাদের ক্যাম্পাসটি পুরাণ ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রায় ১৪৬ বছর হয়।আমাদের ক্যাম্পাসে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষকের সংকট রয়েছে। আবাসিকের সংকট ও রয়েছে। প্রায় সতেরো হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র দুটি বাস যথেষ্ট নয়। আমাদের একটি ছাত্রাবাস রয়েছে (শহীদ শামসুল আলম ছাত্রাবাস)সেখানে মাত্র ১২০টি সিট রয়েছে। সতেরো হাজার শিক্ষার্থীর জন্য অপ্রতুল। ২০২০ সালের মধ্যে আমরা আমাদের এই সংকটের সমাধানের প্রত্যাশা করছি।
ইমরান হোসেন বলেন নতুন বছরে প্রাণের ক্যাম্পাস যেন প্রকৃত শিক্ষার্থী বান্ধব হয় এবং প্রশাসন যেন সকলের জন্য সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে।কলেজের লাইব্রেরিটি যেন যেন আরও বেশি প্রসারিত করে আমাদের পড়াশোনার সুযোগ করে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে যে সকল সংকট ছিল বিশেষ করে সেশনযট সহ ফলাফল দিতে বিলম্ব এ সকল সংকটগুলো যাতে কেটে উঠতে পারে আমরা এটাই আশা করছি।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার