আশিকুজ্জামান ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় নেত্রকোনা শহরের আল-নূর হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত প্রসূতির নাম রোজিনা আক্তার (২৩)।
রোববার রাতে সিজারের মাধ্যমে ছেলেসন্তান জন্ম দেয়ার পর মারা যান ওই প্রসূতি। এর পরই দিবাগত রাতে ওই প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ এনে পরিবারের পক্ষ থেকে নেত্রকোনা মডেল থানায় অভিযোগ করা হয়।
রোজিনা আক্তার নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কৃষক আশিক মিয়ার স্ত্রী।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাখাওয়াত হোসেন জানান, নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে রাখা প্রসূতি মায়ের মরদেহ দেখা হয়েছে। স্বামীসহ পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। প্রক্রিয়া মতে, সোমবার সকালে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোজিনার স্বামী আশিক, বাবা চান্দু মিয়া, ভাসুর ফজলুর রহমান জানান, প্রাইভেট ওই হাসপাতালের ম্যানেজারের সঙ্গে এদিন রাতেই ১২ হাজার টাকার মধ্যে সিজারের কনটাক্ট হয়। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা ডা. জীবন কৃষ্ণ সন্ধ্যা ৬টায় হাসপাতালে তাড়াহুড়া করে রোজিনার সিজার করেন।
সিজারের আগে চিকিৎসক কিংবা হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট কেউ অবহিত করেননি রোগীর রক্ত লাগবে। সিজারের মাধ্যমে ছেলে জন্ম হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে রক্ত লাগবে জানিয়ে দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতাল ত্যাগ করেন চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ! ততক্ষণে প্রসূতি মায়ের পৃথিবী নিথর নিস্তব্ধ।
সেখান থেকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. টিটু রায় রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে ডা. টিটু রায় জানান, রোজিনাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। রাতেই একাধিকবার তাদের নাম্বারে কল করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসূতির পরিবারের দাবি, চিকিৎসকসহ হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা যাদের অবহেলায় রোজিনার মৃত্যু হয়েছে, তারা যেন প্রত্যেকে আইনের আওতায় আসে। যারা মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় নিজেদের স্বার্থে তাদের নিশ্চিত যেন হয় শাস্তি। নয়তো এভাবেই একের পর এক রোজিনার মৃত্যু হবে।
নেত্রকোনা মডেল থানায় ওসি তাজুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।