প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার(১৪ জানুয়ারী) বিকালে মেলার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। মেলা চত্বর প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলা চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর ভালবাসায় লালীত এই সোনারগাঁও তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন তিনি জানতেন বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে লোক ও কারুশিল্প প্রয়োজন। তাই তিন এই বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এর অনুমোদন দেন। সোনারগাঁ কে একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন এলাকা হিসেবে গরে তুলবো।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডঃ আহমেদ উল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ডঃ মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল, অসিম কুমার উকিল এমপি, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সোহেল রানা।
জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬৪ জন কারুশিল্পী মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিবেন। তাদের জন্য ৩২টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে । এর মধ্যে নওগাঁও ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের তালপাখা ও নক্শি পাখা, রংপুরের শত রঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারু শিল্প, নক্শিকাঁথা, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, নক্শি হাতপাখা, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁওয়ের পাটের কারু শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোস শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র, ঢাকার কাগজের হস্ত শিল্পসহ মোট ১৫৪টি স্টল থাকছে।
এছাড়াও লোক কারু শিল্প মেলা ও লোকজউৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান,লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকবে।
বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে মেলার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন এবং পুনরুজ্জীবন এ মেলার মূল উদ্দেশ্য।