ভুমি রক্ষায় নিজেদের অসহায় দাবি করে আবারো আইননানুগ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শাহী ঈদগাহ’র ফিরোজ খানের ওয়ারিশবৃন্দ। মঙ্গলবার সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবে এক লিখিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই আবেদন জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মরহুম ফিরোজ খানের স্ত্রী আরেতুন বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের জায়গার যাবতীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করে তিনি বলেন, ফিরোজ খান নিজ ক্রয়কৃত ভুমিতে ১৯৬৬ সাল থেকে বসবাস করে আসছেন যার ২০১৫ সাল পর্যন্ত খাজনার ডকুমেন্ট রয়েছে আমাদের হাতে। একই ভুমিতে ১৯৮৮ সনে সিলেট পৌরসভা অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ফিরোজ খানের নামে ২য় তলা মার্কেট তৈরি করে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, হোল্ডিং টেক্স (হালনাগাদ) নিয়মিত পরিশোধ করে আসছেন।
তিনি বলেন, ফিরোজ খান মঞ্জিলের জায়গা দিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে শুয়েবুন নবীর সাথে। জাল দলিলের পাওয়ার এটর্নি রয়েছে সৈয়দ আশরাফ। সেই জায়গার ক্রয় সূত্রে মালিক দাবিদার হলেন বর্তমান সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা ও কাউন্সিলর আজাদ গং।
তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের কল্যানে গেলো বছরের ২৯ মে তারিখে ফিরোজ খানের বাড়িতে ওই ভুমিখেকো চক্রের হামলা সম্পর্কে গোটা সিলেটবাসী অবগত রয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে এই নারকীয় হামলার মাধ্যমে পরিবারের ২০/২৫ জন মানুষের ঈদের খুশি হারাম করে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে বসতভিটা। ক্ষতি সাধন করা হয়েছে ৬/৭ লাখ টাকা। সিলেট কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিজে এই নারকীয় তান্ডব প্রত্যক্ষ করেছেন।
এতেই প্রমাণ হয়, সৈয়দ আশরাফরা ভূমিখেকো কি না? সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, সালিশ বসলেও আমরা কাগজপত্র দেখাতে পারিনি। এটিও মিথ্যা। সালিশ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোসাহিদ আলী উভয়পক্ষের কাগজপত্রই সঠিক বলে মনে হওয়ায় আদালতের হাওলা করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রমাণও আছে আমাদের কাছে। সালিশ কমিটির সদস্য মাসুকের কাছে এখনো ৭ মাসের ভাড়া জমা। তারা এনিয়ে এখনো টালবাহানা করছেন। সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ কেবলমাত্র একজন সালিশ। অথচ সালিশ কমিটিতে তার নামই নেই, বরং ১ নম্বর ক্রেতা হিসাবে তার নাম দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার জামাতা আরিফ ও নাতি নাঈম মামলার কাগজপত্র দেখে। ৩০ জানুয়ারি কালাপাথরে মারামারির ঘটনায় আজাদ গ্রুপের একজন আহত হয়েছে। এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানায় যে মামলা হিয়েছে তাতে ৫ ও ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে আরিফ ও নাঈমকে। অথচ সেদিন তারাসহ পরিবারের ৫ সদস্য কুলাউড়ায় একটি ওয়ালিমার অনুষ্ঠানে ছিল। অপু গুন্ডা ও ঐ মামলার বাদীর প্রতিবেশি। ষড়যন্ত্র করে আরিফ-নাঈমকে আসামি করা হয়েছে। আট মাসেও আমাদের ভাংচুর-লুটপাটের মামলায় কোন আসামি ধরা পড়েনি। অথচ এ মামলায় একদিনের মধ্যেই এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ মাঝরাতে বাসার পাচিল টপকে প্রবেশ করে হয়রানি করছে। এটি কিভাবে এবং কিসের প্রভাবে সম্ভব হয়েছে-আপনাদের কাছে সেই প্রশ্ন রেখে গেলাম। আমাদের আহার নিদ্রারও উপায় নেই। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে র্যাব সদস্যরাও বাসায় এসেছিলেন। তারা কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বলেছেন। অথচ ৪ মাস আগে আমরা র্যাবের অধিনায়কের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেও কোন সহায়তা পাইনি। পুলিশ কমিশনার কাউন্সিলর, মেয়র, জেলা প্রশাসক বরাবরেও আবেদন করেছি। ডিজিএফআই, এনএসআই র্যাব অধিনায়ক এবং দুদক পর্যন্ত অনুলিপি দিয়েছি, কিন্তু কোন ফল পাইনি। আমরা প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও সাহায্যের আবেদন করেছি। আমরা খুবই অসহায়। তাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনসহ সিলেট আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, শহরের যেকোনো হামলা কিংবা চাঁদাবাজির ঘটনায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই চক্রটি আমার পরিবারের যে কাউকে মামলায় ঢুকিয়ে দিতে এখন তৎপর রয়েছে। এ অবস্থায় গোটা পরিবারের সকল সদস্যদের মধ্যে এক গভির আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকার নিরীহ মানুষকে আইনানুগ সহযোগীতা প্রদানে কঠোর অবস্থানে থাকলেও সেখানে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে এই চক্রটি আমাদের জীবনকে তিল তিল করে দুর্বীসহ করে তুলছে।
এই অবস্থায় সদাশয় সরকার এবং আইনানুগ কতৃপক্ষের নিকট নিরীহ এবং শান্তিপ্রিয় ফিরোজ খানের পরিবার সহযোগীতা কামনা করে ত্বড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার