আশিকুজ্জামান ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় রামগোপালপুর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ায় একসঙ্গে তিন যুবক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
তারা হলেন অজয় চন্দ্র বর্মণের ছেলে হৃদয় চন্দ্র বর্মণ (১৯), বর্তমান নাম উসমান, দীলিপ চন্দ্র বর্মণের ছেলে প্রদীপ চন্দ্র বর্মণ (২১), বর্তমান নাম উমর ও শশী বর্মণের ছেলে অমল চন্দ্র বর্মণ (১৯), বর্তমান নাম আবু বক্কর।
এ ছাড়া গৌরীপুর পৌর শহরের কলাবাগান কাঠমিস্ত্রি বিমল চন্দ্র বিশ্ব শর্মা (৪০) ইসলাম গ্রহণ করেন। তার বর্তমান নাম মো. আবদুল্লাহ।
জানা যায়, তিন যুবক দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির বাহিরে অবস্থান করছিলেন। ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ইসলাম ধর্মগ্রহণের পর থেকে বর্তমান ঠিকানা ময়মনসিংহ সদরের মাদরাসাতুস মাওয়াহ আল ইসলামিয়া মোমেনশাহীতে অবস্থান করছেন ওই তিন যুবক।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ময়মনসিংহ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ বিষয়টি ঘোষণা করেন।
ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করেন– তারা দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বই পাঠ করে এবং বিভিন্ন দিক দিয়ে এ ধর্ম সম্পর্কে অবগত হয়ে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন। ইসলাম ধর্মের প্রতি তাদের মন আকৃষ্ট হলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এতদিন নিজ ধর্ম পরিত্যাগ করতে পারেননি। অবশেষে তারা সিদ্ধান্ত নেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টি।
এতে কারও কোনোরূপ প্ররোচনা নেই। এফিডেভিটে প্রকাশ– স্থানীয় এক মসজিদের ইমামের সম্মুখে ‘লা-ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুল্লাহ (সা) পাঠ করে তারা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেন।
এদিকে পবিত্র ইসলাম ধর্মের আচার অনুষ্ঠান, ধর্মীয় বিধিবিধান, নিয়মকানুন ভালো লাগায় পবিত্র ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট হয়ে হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন কাঠমিস্ত্রি বিমল চন্দ্র বিশ্ব শর্মা (৪০)।
বিমল ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা। গৌরীপুর থানা মসজিদের ইমাম ফজলুল হক কালিমা পাঠ করে ইসলামিক নিয়ম অনুসারে স্থানীয় মুসলিমদের উপস্থিতিতে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
এ সময় তার নাম রাখা হয় মো. আবদুল্লাহ। নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কেড়জানী গ্রামের নরেন্দ্র চন্দ্র বিশ্ব শর্মার ছেলে বিমল চন্দ্র বিশ্ব শর্মা। পরিবারের দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় সন্তান তিনি।
বিমলের স্ত্রী আট বছর আগে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমানে তার দুই মেয়েকে নিয়ে গৌরীপুর পৌর শহরের কলাবাগান এলাকায় বসবাস করছেন।
বিমল যুগান্তরকে জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। কোনো জায়গায় ওয়াজ-মাহফিল হলে তিনি তাতে অংশগ্রহণ করতেন। এ জন্য তাকে পরিবারের সদস্যদের নানা কথাও শুনতে হয়েছে।
বিমল আরও বলেন, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ইচ্ছা তার দীর্ঘদিনের। অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বাকি জীবন তিনি মহান আল্লাহর এবাদতের মাধ্যমে কাটিয়ে দিতে চান।