একটি প্রভাবশালী চক্রের হাতে জিম্মি নুরজাহান এবং এবং তাঁর পরিবার। এই চক্রের একের পর এক মিথ্যাচার এবং ভয়-ভীতিতে বাড়ি ছাড়া দেশে থাকা একমাত্র ছেলে তবারক আলী। শুধু এখানেই শেষ নয়, এই চক্রের সাজানো মামলায় ৫ মাসের অন্ত:স্বত্বা পুত্রবধুও বর্তমানে কারাগারে থেকেও নতুন মামলার আসামী। এই অবস্থায় এই চক্রের হাত থেকে নিজ পুত্র, পুত্রবধু এবং ভিটেমাটি রক্ষায় দ্রুত আইনানুগ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পাটাকইন গ্রামের মৃত আলকাছ আলীর স্ত্রী নুরজাহান বিবি।
মঙ্গলবার( ৩ মার্চ) সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি এই দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে নুরজাহান বিবির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একই গ্রামের জালাল উদ্দিন। নুরজাহান বিবি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, তার ৩ ছেলের মধ্যে ২ জন প্রবাসে। দেশে অবস্থান করছে ছোট ছেলে তবারক আলী। কিন্তু একই ইউনিয়নের পাঁচকড়ি গ্রামের মৃত মনোহর আলীর প্রভাবশালী ছেলে সিরাজ মিয়ার কুটচালে তবারক আলী এখন বাড়ি ছাড়া। তিনি আরো জানান,তার ৫ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা পুত্রবধু ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ছেলে তবারক এলাকার মসজিদ মাদ্রাসা ও স্কুলের উন্নয়নকাজের সাথে জড়িত। তাছাড়া শালিস ব্যক্তিত্ব হিসাবেও সে খুব জনপ্রিয়। এ কারণে সিরাজ ও তার দলবলের রোষানলে পড়ে। তারা সম্প্রতি গ্রামের একটি মসজিদে কিছু অনুদান দিয়ে সিরাজের নামে নেমপ্লেইট লাগিয়ে দেয়। তবারক আপত্তি জানালে তাদের রোষানলে পড়ে। তারা নানা অপপ্রচার ও মিথ্যাচার চালাতে শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আশুগঞ্জ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের গভর্ণিংবডির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সিরাজ মিয়ার প্যানেলকে পরাজিত করে জয়লাভ করে তবারকের প্যানেল। এর আগের কমিটিতে সিরাজ মিয়া ও তার প্যানেল ছিল। নতুন কমিটি দায়িত্ব লাভের আগেই মূল্যবান নথিপত্র সরিয়ে ফেলা হয়। এমন কি কম্পিউটারে সংরক্ষিত তথ্যও মুছে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি বিশ্বনাথের থানা পুলিশ অবগত। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে তারা তবারককে ফাঁসাতে ব্যর্থ হয়। এরপর কৌশল পরিবর্তন করে তারা আরো জঘন্য পথ অবলম্বন করে। সম্প্রতি তবরাকের স্ত্রীর নামে কেনা সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে গাঁজাসহ এক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। ব্যবসায়ী আটক হলেও সিরাজের কুটচালে তবারকের স্ত্রীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। একইভাবে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ডিবি পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ আটক হয় আরো দুই মহিলা। তারা দাবি করে তবারক ও তার স্ত্রী তাদের সাথে জড়িত। এক্ষেত্রে মামলা হয়েছে তবারক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা থেকে সিলেট ফেরার পথে ইয়াবাসহ আরো ২ মহিলাকে আটক হয়। এদের একজন বিশ্বনাথের আলহেরা মার্কেটের ব্যবসায়ী দুলু মিয়ার স্ত্রী সুমি আক্তার লিপি। এদের সাথে সিরাজ ও তার দলবলের গভীর সখ্যতা। আটকের দুদিন পর সুমি মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেয় যে, ইয়াবার মালিক তবারক ও তার স্ত্রী। যদিও পুলিশী তদন্তে তবারক আলী ও তাঁর স্ত্রীর সম্পৃকত্তার প্রমান পাওয়া যায়নি।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, আগের মামলায় কারাগারে থাকা সাবিনা কিভাবে ইয়াবা বা গাঁজা সরবরাহ করে? মূলত মসজিদের নেইমপ্লেট লাগানোর প্রতিবাদ, স্কুলের নির্বাচনে পরাজয় ও নথিপত্রসহ মূল্যবান সামগ্রি চুরির অপকর্ম ঢাকতেই ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন সিরাজ ও তার দলবল। এর আগে গত বছর এলাকার প্রায় দুই শতাধিক মানুষের স্বাক্ষর নিয়ে তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে সিলেটের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তাদের চক্রান্তে আমার ৫ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা পুত্রবধু আজ কারাগারে। আর মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার কারণে ছেলে তবারক নিখোঁজ। আমার আশঙ্কা, সিরাজ গংরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। তিনি একজন মা হিসাবে তার ছেলে ও পুত্রবধুর বিরুদ্ধে এমন জঘন্য ষড়যন্ত্রকারী সিরাজ ও তার দলবলের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার