আমিনুল ইসলাম বুলবুল: বাংলার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান
এ এইচ এম নাঈম:
মালাহাইদে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ড। ম্যাচের আগের দিন অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে কেভিন ও'ব্রায়েনকে ফোন করলেন এক ভদ্রলোক। বললেন, "দেখো কেভিন, এই সুযোগ কিন্তু আর জীবনে কখনোই পাবেনা। নিজেদের ইতিহাসের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করার সুযোগ সবাই পায়না। শুভকামনা রইল তোমার জন্য।"
কেভিন ও'ব্রায়েন যেন ভদ্রলোকের পরামর্শ একদম গেঁথে নিলেন মস্তিষ্কের ভেতর। নিজেদের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে করলেন শতক। দিন শেষে সেই সিডনি থেকে ফোন করা ভদ্রলোকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন।
যে ভদ্রলোকের কথা বলছি, তিনি আর কেউই নন, বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে শতক হাঁকানো আমিনুল ইসলাম বুলবুল। কেভিন ও'ব্রায়েন তার ভালো বন্ধু।
২০০০ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সৌরভ গাঙ্গুলীর ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান তোলে বাংলাদেশ। হাবিবুল বাশার অর্ধশতক পেলেও দুর্দান্ত শতকের মাধ্যমে পাদপ্রদীপের আলো নিজের দিকে কেড়ে নেন বুলবুল। প্রথম দিন শেষে ৭৫ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি৷ সন্ধ্যায় হোটেলের লিফটে দেখা হলো সৌরভের সাথে। বুলবুলকে বললেন, "কাল সকালেই কিন্তু নতুন বল নেব।" বুলবুল বললেন, "নাও, সমস্যা নেই, সেঞ্চুরি আমি করবোই।"
বুলবুল কথা রেখেছিলেন। ৩৮০ বলে ১৭ চারে ১৪৫ রানের চরম ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেন তিনি। ক্রিজে ছিলেন সাড়ে আট ঘন্টারও বেশি সময়। তার খেলা দেখেই মনে হওয়ার কোনো উপায়ই ছিলোনা যে, নিজেদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন এখন বুলবুল। এখনো যখন অস্ট্রেলিয়ার কোনো অনুষ্ঠানে যান, তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় দেশের টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে। বিষয়টা উপভোগ করেন বুলবুল। একজন ক্রিকেটারের কাছে এর থেকে গৌরবের আর কীইবা হতে পারে!
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার