করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সন্দেহে লালমনিরহাটে মৌসুমী আক্তার (২২) নামে এক পোশাক শ্রমিকের লাশ তিস্তা নদী ভাসিয়ে দেয়ার দুদিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকালে জানাজা শেষে মৌসুমীকে নিজ গ্রামে দাফন করে আদিতমারী ও পাটগ্রাম থানা পুলিশ। তিনি পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে।
পুলিশ ও মৃতের পরিবার জানায়, মৌসুমী গাজীপুরে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার অসুস্থতা নিয়ে ট্রাক করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি এবং পথে মারা যান। ট্রাকের চালক রংপুরের তাজহাট এলাকায় তার লাশ ফেলে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ তা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। শুক্রবার গোলাম মোস্তফা তাজহাট থানায় গিয়ে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন।
বাবা গোলাম মোস্তফা মেয়ের লাশ নিজ এলাকায় দাফনের জন্য মোবাইলে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিসাদের অনুমতি চান। কিন্তু চেয়ারম্যান লাশসহ তাদের বাড়ি এবং লাশবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ গোলাম মোস্তফার।
শেষে তিনি মেয়ের লাশ দাফন করতে তাজহাট এলাকার এক লাশবাহী গাড়ির চালককে পাঁচ হাজার টাকা দিলেও চালক লাশ দাফন না করে তিস্তা নদীতে ভাসিয়ে দেন। ঘটনার দুই দিন পর আদিতমারী থানা পুলিশ উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে সরকারি ব্যাগে মোড়ানো লাশটি উদ্ধার করে।
গোলাম মোস্তফা বলেন, লাশ গ্রামে নিয়ে দাফন করার অনুমতির জন্য হাতে-পায়ে ধরলেও তাতে সম্মতি দেননি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিসাদ। পরে বাধ্য হয়ে দাফন করতে এক চালককে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছি। সে দাফন না করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়। অবশেষে পুলিশের পাহারায় মেয়ের লাশ দাফন করেছি।
এ অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আবু সাঈদের নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও মোবাইল কেউ রিসিভ করেননি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকারি ব্যাগে মোড়ানো মর্গের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ইউডি মামলা করা হয়েছে। মৃতের পরিচয় জানার পরে ও মেয়ের বাবার আকুতিতে দুই থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে লাশ তার গ্রামে দাফন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সূত্র: ইউএনবি / নয়াদিগন্ত