রাব্বি হাসান,নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গেল জুন মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৫৮টি দুর্ঘটনায় ৩৬৮ জন নিহত ও ৫১৮ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ২০টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত ও ৬০ জন আহত এবং ১০ জন নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে।
রোববার (১২ জুলাই) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এই মাসে দুর্ঘটনায় ৩৪.৯ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ২৪.১৫ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১২.১ শতাংশ বাস, ৯.২৪ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৮.১১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৭.১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৪.৩৪ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় ৮ জুন। এ দিন ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ২৫ জন আহত হয়। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় ১০ জুন। এ দিন ৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়।
মোট দুর্ঘটনার ৫১.১২ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৪.৫৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৫.০৮ শতাংশ খাদে পড়ে, ৭.৫৪ শতাংশ বিবিধ কারণে, ১.১২ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং ০.৫৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এইমাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪৮.৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩১.৫৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৩.৯৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ২.৭৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.৯৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১.১২ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।
মে মাসের তুলনায় বিগত জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ৫৬.১৪ শতাংশ, নিহত ৫৭.৩৪ শতাংশ ও আহতের হার ৪৩.৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদনে যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছেন, সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহিতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। সরকারের আন্তরিকতা ও বিগত নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকলেও বর্তমান সরকারের দুটি বাজেটে তার কোন প্রতিফলন ঘটেনি। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যতিরেকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার