চাঁদার দাবীতে সুন্দরবনে এক জেলের উপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে । ৯আগষ্ট (রোববার) বিকেলে পুর্ব সুন্দরবনের কটকা ষ্টেশনের আওতাধীন দুধমুখী নদীর বালির খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে । নির্যাতনের শিকার ওই জেলে উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত. হক খানের ছেলে মোঃ মামুন খান (৩২) বলে জানাগেছে ।
ঘটনার পর একই দিন সন্ধ্যায় সংঙ্গীয় জেলেরা মামুনকে উদ্বার করে ১০আগষ্ট (সোমবার) সকালে মুমুর্ষ অবস্থায় শরনখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন । চিকিৎসাধীন মামুন ও তার পরিবারের সদস্যরা জানায় , চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রতিবেশি মোঃ দুলাল হাওলাদার, মোঃ রাসেল খান, ও মোঃ জিয়ারুল হাওলাদার সহ ৪/৫ জেলে এক সাথে ইলিশ আহরনের উদ্দেশ্যে সাগরে যায় । নদীতে জাল ফেলে ৯আগষ্ট (রোববার) বিকাল পাঁচটার দিকে মামুন সহ সংঙ্গীয় জেলেরা সুন্দরবনের কটকা ষ্টেশনের কাছাকাছি দুধমুখীর বালির খাল এলাকায় অবস্থান করছিলেন ।
ওই সময় উপজেলার বকুলতা এলাকার বাসিন্দা মৃত. আব্দুল হক ফরেষ্টারের ছেলে এবং উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ হাসানুজ্জামান পারভেজ তার সহযোগী একই এলাকার বাসিন্দা মৃ. রশিদ হাওলাদার ও মৃ. চাঁন মিয়া হাওলাদারের ছেলে এবং সুন্দরবনের বনদস্যু রাজ্জাক বাহীনির এক সময়ের সহযোগী মোঃ আলম হাওলাদার ও মোঃ নাছির হাওলাদার, সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা মৃ. মালেক হাওলাদারের ছেলে ও কৃষক বাদশা হাওলাদার হত্যা মামলার আসামী মোঃ জাকির হোসেন হাওলাদার এবং সোনাতলা এলাকার বসিন্দা মোঃ রশিদ মৃধার ছেলে মোঃ মিজান মৃধা সহ ৬/৭ জনের একটি দল ট্রলার যোগে জেলে মামুনের ট্রলার ঘেষে নোঙ্গর করেন ।
ওই সময় নদীতে জাল পাতা দেখে ভাইস চেয়ারম্যান মামুনকে ডেকে নিয়ে বলেন, এখানে জাল ফেলেছো ক্যান , অনুমতি দিছে কে , তোদের বলছিনা সুন্দবনের নদী কিংম্বা সাগরে যেখানে জাল ফ্যালো মাসে মাসে টাকা দিবি । তা না হলে মাছ ধরতে আসবি না । কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পারভেজের নেতৃত্বে জাকির ,আলম, নাছির ও মিজান একজোট হয়ে মামুনকে এলো পাথাড়ি পিটিয়ে চরে ফেলে দেয় এবং ট্রলারে থাকা ইলিশ বিক্রির নগদ ২৫হাজার টাকা সহ ৩৮টি ইলিশ মাছ লুটে নেয় ।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মামুনকে উদ্ধার করে ট্রলার যোগে শরনখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তার সহকর্মীরা । মামুনের স্ত্রী তানিয়া বেগম , মৎস্য ব্যাবসায়ী এমাদুল শরীফ, স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ শাহ আলম খান সহ অনেকে বলেন , পাস পারমিট ছাড়া অবৈধ ভাবে জঙ্গলে ঢুকে ভাইস চেয়ারম্যান ও তার লোকজন জেলেদের উপর বনদস্যুদের মতো তান্ডব চালাচ্ছেন ।
এ ঘটনায় নিরীহ জেলেদের মধ্যে আতংঙ্ক বিরাজ করছে । বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রসাশনের সুদৃষ্টি আর্কশন করেন তারা।এ ব্যাপারে সুন্দরবন পুর্ব বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন , ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জেলে নির্যাতনের ঘটনা শুনেছি । অবৈধ ভাবে সংরক্ষিত বনে প্রবেশের অপরাধে তাকে আটক করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে ।
অপরদিকে, এ বিষয়ে জানতে ভাইস চেয়ারম্যান পারভেসের মোবাইল ফোনে বহুবার কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ এস কে আব্দুল্লাহ আল সাইদ জানান, বিষয়টি শুনেছি, ক্ষতিগ্রস্থ জেলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেলে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।