বহুল আলোচিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা অনুমোদন দিয়েছে বৃটেন। আগামী ৪ঠা জানুয়ারি থেকে এই টিকার ব্যবহার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গেম চেঞ্জার হতে পারে এ টিকা। কারণ এটির সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধাজনক। যদিও এর কার্যকারিতা অন্য টিকাগুলোর তুলনায় কিছুটা কম। বৃটেনে অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদনে বাংলাদেশে এক ধরনের স্বস্তি দেখা দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে সহসাই এ টিকা বাংলাদেশে আসবে। এ টিকা পেতে বাংলাদেশ সরকার, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মার মধ্যে চুক্তি রয়েছে।
এ চুক্তির আওতায় তিন কোটি ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ। জানুয়ারি থেকে প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা রয়েছে।
ওদিকে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকার ওপর সর্বোচ্চ জোর দিয়েছে বৃটেন। এরইমধ্যে ফাইজার/বায়োএনটেকের টিকা সবার আগে অনুমোদন দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগ শুরু করেছে দেশটি। তবে সেই টিকা সবাইকে দেয়া হচ্ছে না। শুধু ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের জরুরি ভিত্তিতে দেয়া হচ্ছে সেই টিকা। এরইমধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন দিলো বৃটিশ সরকার। এই টিকার ১০ কোটি ডোজ কেনার অর্ডার দিয়ে রেখেছে দেশটি। বৃটেনের জনসংখ্যা ৫ কোটি প্রায়। ফলে এই টিকা দিয়ে সবাইকে টিকাদান সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা মেডিসিন নিয়ন্ত্রকরা অনুমোদন দেয়ার অর্থই হলো এটা একই সঙ্গে নিরাপদ ও কার্যকর। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এ বছর প্রথম কয়েক মাসে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এই টিকা তৈরি করে। প্রথমবারের মতো তা এপ্রিলে স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর প্রয়োগ করা হয়। তারপর থেকে কয়েক হাজার মানুষের ওপর ব্যাপক হারে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। অক্সফোর্ডের টিকা অনুমোদনের ফলে টিকাদানের গতি বৃদ্ধি পাবে। কারণ, অক্সফোর্ডের টিকা দামে সস্তা এবং বহন করাও সহজ। এই টিকা সাধারণ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। অন্যদিকে ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ করতে হয় মাইনাস ৭০ থেকে মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ কারণে, অক্সফোর্ডের টিকা কেয়ার হোম অথবা জিপি সার্জারিগুলোতে রাখা সহজ হবে।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড বলেছে, দেশে করোনা সংক্রমণ অপ্রত্যাশিত পর্যায়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং দক্ষিণ ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তারা করোনা সংক্রমণ নিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য খাতে (এনএইচএস) ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এরপরই কর্তৃপক্ষ অক্সফোর্ডের টিকা অনুমোদন দিলো। এই অনুমোদন দেয়ার পর টিকাদান বিষয়ক টিম এখন যত বেশি সম্ভব মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ প্রয়োগ করবে। জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাক্সিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনের পরামর্শক্রমে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল কেয়ারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ঝুঁকিতে থাকা যত বেশি সংখ্যক সম্ভব ব্যক্তিকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অল্প সময় পরেই তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার প্রয়োজন আছে। প্রথম ডোজ নেয়ার ১২ সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। দ্বিতীয় ডোজ নেয়া হলে কোর্স সম্পূর্ণ হবে। দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার