সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার করতে স্থানীয় কলি বাহিনীর সন্ত্রাসীরা নিরীহ মানুষের উপর তান্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শরীরে গরম পানি ঢেলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয় এক যুবককে। আরেক জনকে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। তারা বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এছাড়া দিনে-দুপুরে এলাকায় শসস্ত্র মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়। নিরীহ ব্যবসায়ীদের বাড়িঘরে গিয়ে প্রকাশে দিবালোকে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করা হচ্ছে। একের পর এক সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটিয়ে আসলেও প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করে আসছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (৮ মার্চ) সকালে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা এলাকায় ঘটে এসব ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্র জানায়, কাঞ্চন পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম রসুল কলির নেতৃত্বে রবিউল, শান্ত, মতিউর, ইসলাম উদ্দিন, মনজুর আলম, বাবু, রোবেল, টুটুল, নির্জন, আলামিন, মাহফুজ, শাকিল, আতাউর, কাকন, ইমনসহ সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে একের পর এক তান্ডব চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে কাঞ্চন বাজার এলাকার মন্ডলের বাড়ির সামনে কালাদি এলাকার মৃত শহিদুল্লার ছেলে নিরীহ আব্দুর রহমানকে এলোপাতারি ভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে কলি বাহিনীর সন্ত্রাসীরা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুকুমারের বাড়ির সামনে থেকে ধরে নিয়ে রানীপুরা এলাকার মৃত সিদ্দিক ভূঁইয়ার ছেলে নিরীহ নাঈম ভূঁইয়ার শরীরে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। তাদের দুই জনকেই মুমুর্ষ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া কালাদি এলাকায় অবস্থিত এফ খান ফিলিং ষ্টেশনের সামনে ফেলে কলি বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পশ্চিম কালাদি এলাকার হাজী মোজাম্মেল হকের ছেলে শাহিন মিয়া ও ত্রিশ কাহনিয়া এলাকার আব্দুল আলীর ছেলে রিফাতের উপর হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা তাদের দু’জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। বেলা ১১টার দিকে রাম দা চাপাতিসহ অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কলি বাহিনীর সন্ত্রাসীরা কাঞ্চন পৌরসভা কার্যালয়সহ কাঞ্চন বাজার এলাকায় মহড়া দেয়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সকালে কাঞ্চন বাজারের ব্যবসায়ী তোফায়েল আহাম্মেদের বাড়িতে শসস্ত্র মহড়া দিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। এর আগেও কলি বাহিনী বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের অভিযোগের শেষ নেই। এসব ঘটনার খবর পেয়ে ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
আহতরা জানান, কাঞ্চন পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম রফিক এক জন ভালো মানুষ। আর মেয়রের ভালো কাজে তারা সহযোগিতা করতেন। আর এ কারনেই কলি বাহিনীর সন্ত্রাসীরা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, সন্ত্রাসীদের ভয়ে এখন কাঞ্চন বাজারে সাধারন মানুষ আসতে চায়না। ভোলাব তদন্ত কেন্দ্র ও কাঞ্চন ফাঁড়ি পুলিশ নিরব ভুমিকা পালন করছে। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও মামলা হলেও অভিযুক্তদের রহস্যজনক কারণে গ্রেফতার করছেনা পুলিশ।
এ ব্যাপারে কাঞ্চন পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, আমি কাঞ্চনকে শান্ত রাখতে চাই। আর গোলাম রসুল কলির নেতৃত্বে তার বাহিনী অশান্ত রাখতে চায়। প্রশাসন যেন কোন সন্ত্রাসীকে ছাড় না দেয় সেই দাবি জানাই। আমিও যদি অন্যায় করি আমার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম রসুল কলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব ব্যপারে কথা বলতে রাজি হননি।
এ ব্যপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, কলি বাহিনীর সদস্যরা অতিরিক্ত করছে, এখন থেকে আর ছাড় নয়।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার