সুমনা অাক্তার অাঁখি(কেএনজিসি প্রতিনিধি)
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ কবি নজরুল সরকারি কলেজে এই প্রথম কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অত্র কলেজের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সাহিত্য সংসদ’ এর আয়োজনে গত সোমবার রাত ১০:০০ টায় ফেইসবুক পেইজে লাইভের মাধ্যমে ভার্চুয়ালে তা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৯টি বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানের আয়োজনে বিচারক হিসেবে সুনিপুণ দক্ষতার সাথে বিচারকার্য সম্পন্ন করেন দেশবরেণ্য ও দেশসেরা হাফেজ ও আলেমগণ। এতে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় মুফাসসির পরিষদের সহ-দাওয়া সম্পাদক, মোহনা,বিজয় ও আনন্দ টিভির ইসলামিক আলোচক, মাও. মো. বেলাল হোসাইন হেলালি।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর এর অনুষ্ঠান উপস্থাপক ও আল আযহার মাল্টি মিডিয়ার চেয়ারম্যান জনাব,হাফেজ কারী ইসমাইল ইবনে মোজাম্মেল হক ও বাংলাদেশের বেতারের শিক্ষা আসরের কারী ও পরিচালক- হাফেজ,কারী, মাও. আজীজুল কাউসার। হাসির প্রত্যয় ফাউন্ডেশন ও বেস্ট এ্যাড এন্ড প্রিন্টিং এর সৌজন্যে আলোকিত কোরআন অনুষ্ঠানটি’ কোরআনের সুরকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং দর্শকগণ একটি মনোমুগ্ধকর হয়েছে বলে আয়োজকদের বিশ্বাস।
গত সোমবার অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করার পর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ইসলাম শিক্ষা বিভাগ মাস্টার্সের ছাত্র মো. আমিনুল ইসলাম প্রথম স্থান ও বাংলা বিভাগ ২য় বর্ষের ছাত্র মো.কাউসার হোসেন ২য় স্থান এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ ৩য় বর্ষের ছাত্র মো.জাহিদ হাসান ৩য় স্থান অধিকার করে।
আয়োজকরা বলেন,ঈদের পরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের মাঝে ক্রেস্ট সহ আকর্ষণীয় পুরুষ্কার প্রদান করা হবে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা এমন সব অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মো. মেহেদী হাসান বলেন, সাংস্কৃতিক সংগঠন মানেই কালচারাল প্রোগ্রাম করা শুধু তাই নয়, এখানে ধর্মীয় শিক্ষার উপর চর্চা করাটাও জরুরি। ভার্সিটিগুলোকে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে। তখন গোটা জাতি এবং জাতীয় জীবন আলোকিত হবে। বিশ্ব আলো পাবে । আজকের মানুষ আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে বসবাস করছে। পুরো পৃথিবী তাদের হাতের মুঠোয়। পলকেই তারা দেখে ফেলে বিশ্ব। চার পাশের ঘটে যাওয়া কত ঘটনা তারা দেখে ফেলে মুহূর্তে। ইন্টারনেট ঘেঁটে বুঁদ হয়ে থাকে জ্ঞানের রাজ্যে। প্রতিদিন নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আবিষ্কারের এ কথা ১৪০০ বছর আগে আল্লাহ কোরআনে বর্ণনা করেছেন।
প্রযুক্তিময় সময়ে কোরআন আমাদের ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে।কুরআন নাযিলের এই মাসে কুরআনকে ঘিরে বর্তমান প্রজন্মের তরুণ সমাজ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিবর্তনের লক্ষ্যে ও কোরআন চর্চার জন্য আমাদের এ আয়োজন। আসুন কোরআন অধ্যয়ন করি। এই রমজান থেকেই জীবনকে প্রযুক্তিময় করে গড়ে তুলি।
বাংলা বিভাগ ২য় বর্ষের ছাত্র মো.কাউসার হোসেন বলেন,এরকম আয়োজন হয়তো আগে কখনো হয়নি। তবে এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। কোরআন বুঝতে হবে কোরআন পড়তে হবে সে ব্যাপারে অনেক ফ্যামিলির পক্ষ থেকে কখনও কোনো চাপ থাকে না। যেমন ধরুন বাবা-মা প্রতিদিন পড়ালেখার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হলে পরিবারের কাছ থেকে একটি চাপ আসে। অনেকের ফ্যামিলিতে এমন রয়েছে যাদের পরিবার থেকে ধর্মীয় বিষয়ে জানার চাপ দেয়া হয় না। তবে ভার্সিটি পর্যায়ে সংগঠন গুলোতে এমন সব আয়োজন চলমান থাকলে আমরা নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে পারি এবং ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে।
ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র তাওহীদ আদনান বলেন,ধর্মকে কেন্দ্র করেই সাংস্কৃতিক বিপ্লব তৈরি হয়। সাংস্কৃতিকে ধর্মের বাহিরে রেখে সম্পন্ন করা যাবেনা। সেক্ষেত্রে কবি নজরুল কলেজের সাহিত্য সংসদে এমন ধর্মীয় আয়জন সত্যিই আমাকে উৎফুল্ল করেছে। কোরআন নাজিলের এই মাসে ছাত্রদের মাঝে কোরান কেন্দ্রিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কোরানিক আভাস তৈরি করার চেষ্টা করেছে। এজন্য সাহিত্য সংসদের এমন উদ্যোগ এবং কার্যক্রমকে আমার অন্তর থেকে সাদুবাদ জানাই।
পুরো অনুষ্ঠানটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় সমাপ্তি করা হয়।