আশিকুজ্জামান মিজান, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্ত্বরে নারী উত্তক্তের ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিগত কয়েক বছরে কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় আপত্তিকর এমন ঘটনা কিছুটা কমে আসলেও সম্পূর্ণ নিরাপদ হয়ে ওঠেনি চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের এই কর্মক্ষেত্র। ইদানিং এই অনিরাপত্তায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে কিছু বখাটে এম্বুল্যান্স চালক ও তাদের সহকর্মী। বিবিধ প্রয়োজনে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং চিকিৎসকবৃন্দ হাসপাতালের বহির্বিভাগের রাস্তাটি ব্যবহার করে থাকেন যা এই করোনা মহামারি কালে হয়ে উঠেছে একদল উচ্ছৃঙ্খল এম্বুল্যান্স চালকদের আতুঁঘর। উল্লেখ্য, মাদক গ্রহণকারী কিছু এম্বুল্যান্স চালক এবং হেলপারদের হিতাহিতজ্ঞানহীন আচরণের ঘটনা যেন বলা বাহুল্য, প্রতিনিয়তই যাদের উচ্ছৃঙ্খলার স্বীকার হচ্ছে চিকিৎসক এবং সাধারণ শিক্ষার্থী।
গত ৪.০৭.২১ তারিখ রাত ১১ঃ৩৪ মিনিটে চারজন নারী চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থী কিছু বখাটে এম্বুল্যান্স কর্মীর উত্তক্তের স্বীকার হোন, অপমানজনক এই ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থী মহলে ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রতিবাদে ৫.০৭.২১ তারিখ রাত সাড়ে ৯ টায় হাসপাতাল চত্ত্বরে সকল এম্বুল্যান্স কর্মীর সাথে আলোচনায় আসার চেষ্টা করেন চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ। সেখানে এম্বুলেন্স মালিকসমিতির সভাপতি সেলিম মিয়া বলেন, 'ভাই, আপনারা শিক্ষিত কিন্তু এরা অশিক্ষিত। মূর্খ ড্রাইভার এরা এগুলা তো করবেই যত বলেন'। তবুও সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীরা প্রস্তাব করেন যেনো উনারা এম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বরে যেখানে সেখানে না রেখে বাইরে রাখে আর প্রয়োজনে গাড়ি নিয়ে ভেতরে এসে রোগী বহনের কাজ করে (ঘটনার পরদিন থেকে)।
আলোচনায় এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো সমাধান তো আসেইনি বরং আজ ৬.৭.২০২১ তারিখ সকাল থেকেই আবারো হাসপাতাল চত্বরে বখাটে কিছু এম্বুলেন্সকর্মীর অবাধ বিচরণ। তাই আজ সকালে হাসপাতাল প্রশাসনকে অবগত করে চিকিৎসক-শিক্ষার্থীবৃন্দ আবারও এম্বুলেন্সকর্মীদেরকে একই প্রস্তাবের অনুরোধ জানালে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয়ে ওঠে এবং চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শুরু করে লাশ আটকে রেখে রোগী হয়রানির মিথ্যা অপবাদ।
চিকিৎসা নিশ্চিত করতেই চিকিৎসকরা লড়াই করছেন দিন-রাত। সাধারণ মানুষের সুস্বাস্থ্য লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি হাসপাতালে চলছে চিকিৎসকদের ত্যাগ স্বীকারের গল্প।
রোগী বা রোগীর স্বজনেরা যেভাবে কিছু অসাধু এম্বুলেন্সকর্মীর খপ্পরে পড়ে কত হয়রানির স্বীকার হচ্ছে নিয়মিত, যুগেযুগে পালিত এই দৃশ্যেকে আর প্রশ্ন করছিনা। প্রশ্ন একটাই। এই মহামারীতে ডাক্তারদের নিরাপত্তা কোথায় তবে?!
মমেকহা'র এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা পুনরায় যেনো না হয় এই প্রত্যাশায় সাধারণ চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের সাথে সহমত পোষন করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা এবং ইন্টার্নী চিকিৎসক পরিষদ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার