আশরাফুল শিকদার, চীফ রিপোর্টারঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যা এলাকার সাটিয়াচড়া গ্রামে এক সেনা সদস্যের বাড়িতে সন্তান ও বিয়ের দাবিসহ এক নারী ৩ দিন ধরে অনশন করছে।সেনা সদস্য ওই এলাকার মো: মিজানুর রহমানের ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ (২৬)।অনশনকারী ওই নারীর বাড়ি নিলফামারী জেলা ও উপজেলার ইটাখোলা চৌধুরী পাড়া এলাকার মো: সেকেন্দার রহমানের মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা আয়শা (২৮)।অনশনকারী ওই নারী ১৬ আগস্ট থেকে ওই বাড়িতে অনশন করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অনশনরত ওই নারীর আরেকটি বিয়ে হয়েছিল। ওই ঘরেও তার সন্তান আছে। তার ওই স্বামী প্রবাসী।
অনশনরত ওই নারী বলেন, সেনা সদস্য আসাদের সাথে আমার ৬ বছর আগে ফেসবুকে পরিচয়। তারপর আসাদ আমাকে বিভিন্নভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।আমার সংসার আছে ওকে বললেও আমাকে বিয়ে করবে এ কথা বলত।পরে দুজনের মধ্যেই ভাল সম্পর্ক তৈরী হয়ে যায়। এক পর্যায়ে বাধা দিলেও ও আমার শ্বশুর বাড়িতেই আসে। আমাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে ও বিয়ে করতে চাইলে আমি রাজি হয়ে যায়। পরে ও আমাকে টাঙ্গাইল আসতে বলে কোর্টে বিয়ে করবে বলে। আমি আসি।পরে আসাদ আমাকে এক বাসায় নিয়ে গেলে ওখানে একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে বলে। আমি স্বাক্ষর করে দেই। ও আমার কাছে কোন ডকুমেন্টস দেই নি। পরে আমি ও আসাদ দুজনে সিদ্ধান্ত নেই বাচ্চা নেয়ার।এখন আমাদের প্রায় দুই বছরের এক ছেলে সন্তান আছে। বাচ্চা পেটে থাকা অবস্থায় আসাদ মিশনে যায় কুয়েত। এখনো কুয়েত আছে। অনশনরত ওই নারী আরো বলেন, লিখিত ডকুমেন্টস আসাদের কাছে, আমার কাছে ও দেই নি। তবে আমার সাথে ও মেসেজে, ইমুতে, ফেসবুক আইডি থেকে যে কথাগুলো বলেছে তা আমার কাছে। আমার সাথে ও ভিডিও চিত্রেও কথা বলেছে যার প্রমাণ আমার কাছে আছে। আসাদের বাড়ি থেকে আমার আগের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে সব বলে দেয়ার পর আমার ওই সংসার নষ্ট হয়েছে। আমার বাবার পরিবার থেকে সম্পর্ক নষ্ট। আমি কি করব বুঝতে পারছি না।আসাদ যদি আমাকে মেনে না নেয় তাহলে এই সন্তান নিয়ে আমি কোথায় যাব? আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।
সেনা সদস্য আসাদ দেশের বাইরে মিশনে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
সেনা সদস্য আসাদের বোন রোকসানা বলেন, এই মেয়ে আমাদের বাড়িতে রাখা সম্ভব না।
অনশনরত ওই নারীর বড় ভাই মুঠোফোনে বলেন, ও আর আমাদের বাড়িতে আসতে পারবে না।ও যেটা ভালো মনে করে সেটাই করুক।
গোপন সুত্রে জানা যায়, অনশনরত ওই নারীকে জোরপূর্বক তারানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।ঘরোয়াভাবে স্থানীয় মাতব্বর নিয়েও বসেছিল আসাদের বাড়িতে। প্রয়োজনে কিছু টাকাও প্রস্তাব করেছে অনশনরত ওই নারীকে।কিন্তু ওই নারী তাতেও রাজি হয় নি।ওই নারী ওই বাড়িতে অনেক কষ্টের মধ্যে আছে। তার উপর চালানো হচ্ছে মানসিক নির্যাতন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,আমি মেয়েকে বলেছি তুমি উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে আস। এখন এই বাড়িতে থেকে চলে যাও।
জামুর্কী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আলী এজাজ খান চৌধুরী রুবেলের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার এসআই মাহফুজুর রহমান মাহফুজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রমান পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার