নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পেয়ে দলের পদ থকে সেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু। এর মধ্যে তিনি নির্বাচনে স্বতন্ত্র লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, পরিবার ও নিজেরা আওয়ামী লীগের জন্য এত ত্যাগ তিতিক্ষার পরেও মনোনয়ন না পাওয়াটা ‘নিজের একটি বড় ব্যর্থতা। সেই ব্যর্থতার দায়ভার থেকেই তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা নিয়েছেন। তবে তিনি পদ ছাড়লেও বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবেই থাকবেন।
অদ্য (১৬ মে রোজঃ সোমবার) দুপুর ১টায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় স্কাই লার্ক রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে তিনি পদত্যাগের ঘোষণার বিকেলে লোকজনদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে নির্বাচনে স্বতন্ত্র লড়াইয়ের ঘোষণা দেন। মতবিনিময় সভায় আরিফ মাসুদ বাবু বলেন, ‘আপনাদের অনুরোধে নির্বাচন করার ঘোষণা দিচ্ছি। আমি আপনাদের ভালোবাসার কাছে দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই এই নির্বাচনটা আমি করবো। আগামী ১৫ জুন মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট হবে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সেখানে ছাত্রলীগের জেলা কমিটির সাবেক সহ সভাপতি সোহাগ রনিকে মনোনয়ন দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরিফ মাসুদ বাবু বলেন, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সাজেদ আলী মিয়া সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ১৯৭০ এর নির্বাচনে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচিত (এম.সি.এ) ছিলেন। আমার ভাই নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, ১৯৭৩ সনে মহান জাতীয় সংসদের সর্বকনিষ্ট এম.পি. এবং ১৯৮৬ স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের দুঃশাষনের আমলে ও বিপুল ভোটে নির্বাচিত এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোবারক হোসেন।
অপর এক ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোশারফ হোসেন কে উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিক দেন। তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করাকালীন সময়ে গত বছর ইন্তেকাল করেন। পরবর্তী উপ- নির্বাচনে আমরা ভেবে ছিলাম আমাদের পরিবারেই নৌকা প্রতিক নিবেন। কিন্তু সে সময় নৌকা আমাদের না দিয়ে একজন সিনিয়র নেতাকে দিলেন, আমরা মেনে নিয়ে ওনাকে সমর্থন দিয়ে চেয়ারম্যান বানিয়ে দিলাম। সবশেষ মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যেটা আমাদের বৎসরের ইতিহাস। মোগরাপাড়া ইউনিয়ন হলো সোনারগাঁ রাজনীতির রাজধানী। আওয়ামী রাজনীতির পূন্যভূমি যার ধারক বাহক হলো আমাদের এই পরিবার। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ১০ বৎসর যাবৎ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগনের সেবা করে আসছিলাম। দুই বছর এই ভয়াবহ করোনা মাহামারীতে আমি এবং আমার পরিবার নেত্রীর নির্দেশে দিন রাত পরিশ্রম করে জীবনের মায়া ত্যাগ করে সাধারন মানুষের পাশে দাঁড়াতে সাধ্যমত চেষ্টা করেছি এত সচ্ছ থেকে রাজনীতি করে বিনিময়ে আজকে নৌকা থেকে বঞ্চিত হলাম।
বাবু বলেন, যে পরিবারে তিন প্রজন্ম আওয়ামীলীগ মনোনীত এম.পি. যা সারা বাংলাদেশে হাতে গুনলে এরকম ১০ টি পরিবার ও খুঁজে পাওয়া যাবে না আজ সেই পরিবারটিকে সামান্য একটি ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা থেকে বঞ্চিত হতে হল, এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে? বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যে পরিবারটির উত্থ্যান, বঙ্গবন্ধুর গড়া আওয়ামীলীগ এর স্বর্ন যুগে সেই পরিবারের এমন করুন পরিণতি, এমন অপমৃত্যু আমার কাছে মনে হয় আমিই ব্যর্থ।