সাকিব আহমেদ | মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি আপলোড করা নিয়ে দুই নারীর ঝগড়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান কে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার পাঁয়তারা করছে একটি কুচক্র মহল।
জানা যায়, দৈনিক অধিকার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে গত ৮'ই জুন "উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে দুই নারীর ঝগড়া, হাতাহাতি" শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় । সংবাদটিতে দুই নারীর ঝগড়ার বিষয়টি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে হলেও সমাজের সামনে তিলকে তাল বানিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান কে কুরুচিপূর্ণ ভাবে তুলে ধরা হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি কুচক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করে চেয়ারম্যান কে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে লিপ্ত হয়।
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে চালা ইউনিয়নের দিয়াবাড়ী (সাটিনাদা) এলাকার কলেজ পড়ুয়া সুমি আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বহুদিন আগে আমার এবং আমাদের উপজেলার লেছরাগঞ্জের শিউলি আক্তারের সাথে সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুকে) পরিচয় হয়। তার সাথে আমার ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। তবে এক পর্যায়ে সে আমার ছবি ফেসবুকে দিলে তার সাথে মনমালিন্য হয়। আমার ছবি ফেসবুকে দেওয়ার কারণে তাকে বাজে ভাষায় গালি দেই। বাজে ভাষায় বকার কারণে সে আমার বাসায় এসে অভিযোগ করে তবে তার সাথে আমার হাতাহাতি-মারামারি এই ধরনের কিছু হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের বাসায় পুলিশ আসে এর পর শিউলি আমাদের বাসা থেকে চলে যায়। আমি মেয়ে মানুষ ব্যপার টা নিয়ে তেমন মাথা ঘামায়নি তবে রাগের মাথায় শিউলি কে বকা দিয়েছিলাম ভাবি'নি এই বিষয়টা এতো দূর যাবে। উপজেলা চেয়ারম্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এবং শিউলির বিষয়ে চেয়ারম্যান কোথা থেকে আসল আমি কিছু জানিনা। এক সাংবাদিক এই বিষয়ে লেখেছে বিষয়টি মিথ্যে আমার সাথে চেয়ারম্যানের কোন সম্পর্ক নাই। সে মিথ্যা লেখেছে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি বলে মন্তব্য করেন তিনি'।
লেছরাগঞ্জের শিউলি আক্তার বলেন, 'বছর খানেক আগে সুমির সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। বারণ করা সত্যেও তার আইডি থেকে আমাকে কল দিত আমি ভেবেছিলাম তার ফেসবুক আইডিটা কোন ছেলে পরিচালনা করেন। এর পর আমি তার ছবি ফেসবুকে দিলে সে আমাকে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করে। গালাগাল দেওয়ার পর তার সম্পর্কে জানতে আমি তার বাসায় গেলে ছবি পোস্ট দেওয়া নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দেখি পুলিশ চলে আসে। কিন্তু আমি তো পুলিশ কে বলিনি। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখে কথা না বাড়িয়ে আমি ওখান থেকে চলে আসি। আপনি সুমি আক্তার কে চেয়ারম্যানের স্ত্রী পরিচয় দিয়েছিলেন কি-না জানতে চাইলে তিনি জানান, সাইদুর কাকার সাথে আমার বাবার ভালো সম্পর্ক ছিল। সে আমাদের পরিবারের একজন অভিভাবক। বাবা বেঁচে থাকতে আমাদের বাসায় সে মাঝে মধ্যে আসত কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর সে আসে না। সম্পর্কে সে আমার কাকা হলেও তাকে বাবার মতো দেখি। আমি এ বিষয়ে আগে কোন সাংবাদিকের সাথে কথা বলিনি। সে যা লেখেছে মিথ্যা লেখেছে আমার এবং সুমির সাথে চেয়ারম্যান কাকার কোন সম্পর্ক নেই । সে মিথ্যা লেখেছেন আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে জানান তিনি।
দৈনিক অধিকার পত্রিকার মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি রফিক খানের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি মানিকগঞ্জ আসেন তথ্য দেব। শিউলি আক্তারের বক্তব্য না নিয়ে কি ভাবে লেখলেন বললে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, আপনি মানিকগঞ্জ আসেন তথ্য দেব আপনার যা যা দরকার সব দেব মানিকগঞ্জ আসেন।
এ দিকে ঘটনা স্থলে যাওয়া হরিরামপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) রুস্তম আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে ডিউটি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেছে ঘটনা স্থলে যেতে তাই পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে তেমন কোন সমস্যা দেখতে পাই'নি। হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ৯৯৯ থেকে আমাকে অর্ডার করেছিল তাই রুস্তম সাহেবকে পাঠিয়েছিলাম কোন নম্বর থেকে কে ৯৯৯ এ কল করেছিল জানি না।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, আমাকে নিয়ে পত্রিকায় বাজে কথা লেখা হয়েছে। যে লেখেছে সে আমার কোন বক্তব্য নেয়নি। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন জন্য আমার শত্রুপক্ষ এমন কুরুচি পূর্ণ কাজ করেছে। যে লেখেছে আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে জানান তিনি।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার