সকালবিডি নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটিতে সব মেরু নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
রাজধানী ঢাকা পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। গত ১৬ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নিয়ে আওয়ামীলীগের হাই কমান্ড যে চিন্তিত সময় অতিক্রম করেছে আগামীতে যেন কোন নির্বাচন এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে নজর রাখছে দায়িত্বশীল নেতারা। সব মেরুকে এক টেবিলে বসার জন্য দলীয় সভানেত্রী ইতোমধ্যে সকলকে পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আওয়ামীলীগের মধ্যে কোন প্রতিপক্ষ সৃষ্টিকারীকে দলের সবোর্চ্চ শাস্তি দেয়ার হুশিয়ারী দেয়া হয়েছে। ১৬ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হওয়ার পর থেকে সব মেরু তাদের দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটিতে সব মেরু নেতাদের স্থান নিয়ে সমঝোতা কমিটি গঠনে প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শেষ করেছে। আগামীতে আওয়ামীলীগের ক্ষমতা থাকা ও বিএনপি-জামায়াতে বিরুদ্ধে মাঠে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে জেলা মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করা হবে। একতরফা কমিটি হওয়ায় অনেক শীর্ষ নেতারা জেলা মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটিগুলোতে পদ পায়নি বরং তারা গ্রুপিংয়ে পড়ে পদবঞ্চিত ছিলেন। আবার দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় অনেক নেতা তাদের পদ আরো বড় দিক নজরে রয়েছে। সব মিলিয়ে আওয়ামীলীগের সব মেরুতে এখন পদ পাবা নিয়ে দৌড়ঝাপ সৃষ্টি হয়েছে। ৫টি উপজেলা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ। জেলা শাখাকে আওয়ামীলীগের প্রশাসনিক কমিটি বলা হয়।
রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁও, বন্দর সদর উপজেলার আংশিক কমিটি পরিচালনা করে থাকে জেলা আওয়ামীলীগ। ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগ। মহানগর শাখাকে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক কমিটি বলা হয়। মহানগর প্রধানত সিটি কর্পোরেশনের পুরো এলাকা ঘিরে। জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি ঠাঁই পাচ্ছেন সব স্থানের নেতারা। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ চান এমপি শামীম ওসমান, জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বর্তমান সভাপতি আব্দুর হাই, সহ সভাপতি আরজু রহমান ভূইয়া। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনা রয়েছে এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত, আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দীপু, বর্তমান সেক্রেটারী আবুল হাসনাত শহীদ মো. বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। তাদের দিয়েই জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি সাজানো পরিকল্পনা করা হয়েছে।
অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটির সভাপতি আলোচনা রয়েছেন জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, বর্তমানের সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবু চন্দন শীল, জেলার সহ-সভাপতি আদিনাথ বাসু। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনা রয়েছেন বর্তমানের সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম আহসান হাবিব ও শাহ নিজাম। গুঞ্জনে শুনা নেতাদের নিয়ে মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটিতে সাজানো হতে পারে। যদি মহানগরের দায়িত্ব মেয়র আইভী পান, তাহলে এখানে শামীম পন্থী নেতারা কিভাবে থাকছেন তা হবে চমক।
অন্য দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের অধীনস্থ উপজেলা বা থানা কমিটিগুলোতে কেমন পরিবর্তন আসবে তা দেখতে জেলা কমিটি আসার পর বুঝা যাবে বলে জানিয়েছে অনেক শীর্ষ নেতারা। এদিকে শহর এর পর মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি শেষ পর্যায়ে কোন ওয়ার্ড কমিটি দিতে না পারায় অনেক নেতা নিরাশ ও স্থবিরতা পরে গেছে।
এই সব থেকে আওয়ামীলীগ বের হতে হলে সব মেরুকে এক টেবিলে বসা ছাড়া কোন উপায় দেখছে না কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। তারা জানিয়েছে, এখানে সব মেরু নেতা অনেক উচ্চ পর্যায়ে চঞ্চল ও মেধাবী। তাদের এসব গুন নিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির আগেই জেলা মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষণা করা হবে। আর জেলা ও মহানগর মতই সকল উপজেলা, থানা, ওয়ার্ড কমিটিগুলো সাজানো নিদের্শনা দেয়া হবে।
জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের একাধিক টিমের নিদের্শনায় জেলা মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি সাজানো হয়েছে। এখন শুধু তাদের ঢাকা ডেকে নিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি তুলে দেয়া। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের মধ্যে কোন প্রতিপক্ষ থাকা যাবে না। দলের কোন প্রতিপক্ষ সৃষ্টি হলে দলের সভানেত্রী কাছে তুলে ধরতে হবে। তিনি তা সকল সমস্যা সমাধান করে দিবেন। ব্যক্তি রেশারেশি থাকতে পারে, সে টা দল কো নিবে না। প্রয়োজনে দল থেকে বের হয়ে রেশারেশি করুণ। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সেখানে বিপুল ভোটে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের প্রার্থী জয়ী করা হবে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের প্রথম পরিক্ষা।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ পলাশ শিকদার