আমির হোসেন | সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের শাল্লায় শালিশের নামে কিশোরীকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বার কতৃক ধর্ষণের ঘটনায় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক ‘শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ( ১৯ সেপ্টেম্বর, রোজ- সোমবার) বেলা সকাল সাড়ে ১১টায় শাল্লা উপজেলা সদরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে এলাকার তিন শতাধিক লোকজন অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন নির্যাতিতা শিক্ষার্থীর বড়ভাই অসীম কুমার দাস, সাংবাদিক বকুল মিয়া, জয়ন্ত কুমার দাস ও রতন দাস প্রমুখ। বক্তারা বলেন গত ১৫ই সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলার বাহারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু, প্রেমিক মলয় দাস ও ইউপি সদস্য দেবব্রত দাস মিলে ঐ কিশোরীকে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ একজন মাদকসেবী। সে প্রতিদিন মাদক সেবন করে সরকারী দলের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় বিভিন্ন অসহায় মহিলাদের অশ্লীলতার চেষ্টা করে আসছেন। পরবর্তীতে কিশোরীর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৬ই সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার আপন বড়ভাই বাদি হয়ে ধর্ষণকারী বাহারা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টুকে প্রধান করে ইউপি সদস্য দেবব্রত দাস মাতব্বর ও মলয় দাসকে আসামী করে শাল্লা থানায় একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- (০২)। এই আসামীদ্বয়কে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট জোর দাবী জানান।
উল্লেখ্য উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের বাহাড়া গ্রামের মলয় দাসের সঙ্গে ঐ নির্যাতিতা কিশোরীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ে না করায় চলতি বছরের গত জানুয়ারী মাসে প্রেমিক মলয় দাসের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে ওই কিশোরী। এতে প্রেমিক মলয় দাস দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নিলে গত ১৪ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ওই কিশোরী মলয়ের বাড়িতে অবস্থান নেয়। পরে মলয়ের পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টুকে জানায়। কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু মলয়ের বাড়ি গিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে দেয়ার কথা বলে ওই কিশোরীকে রাতেই বাড়ি পাঠিয়ে দেন। সকালে তাকে শালিশের কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন এবং পরিষদের একটি কক্ষে ঐ কিশোরীকে চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য মিলে ধর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে।