মিজু আহম্মেদ, শাজাহানপুর(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ ভ্রাম্যমান আদালতে জেল জরিমানা এবং নিয়মিত মামলা হলেও বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় থামছেনা মাটি বালু ব্যবসায়ীদের দৌড়ত্ব। সকল বাঁধা অতিক্রম করে মাঝিড়া, খোট্রাপাড়া এবং মাদলা ইউনিয়নে মাটি উত্তোলন করছেন উপজেলার সবচেয়ে পুরাতন ব্যবসায়ীরা। আগামী বছরের জন্য ইট ভাটা গুলোয় মাটি সংরক্ষন করা হচ্ছে।
মাটি বহনকারী ট্রাকের চাকায় ধ্বংস হচ্ছে সরকারের বিপুল অর্থ ব্যায়ে নির্মিত সড়ক। অপরদিকে সড়ক সংলঘ্ন জমি কেটে পুকুর করায় সড়ক ভেঙে পুকুরে চলে যাচ্ছে অনেক জায়গায়। এতে সাধারণ জনদূর্ভোগের পাশাপাশি সমালোচনার মুখে পড়ছে সরকার।
মাটি উত্তোলনে ব্যবহার করা এসকেভেটর(খনন যন্ত্র) জব্দ সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে জানাযায়, মাঝিড়া ইউনিয়নের সাজাপুর গ্রামে সম্প্রতি ৪টির বেশি জমি খনন করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। এখনো একটি পয়েন্ট চালু রয়েছে। মাটি উত্তোলন করছেন উপজেলার পুরাতন মাটি ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, আমি(সাইদুর রহমান), মোমিনুল ইসলাম এবং শাকিল মিলে মাটির পয়েন্ট চালাচ্ছি। এই ব্যবসায় অনেক ঝড় আছে ভাই। টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করেই চালাতে হচ্ছে।
পুরাতন মাটি ব্যবসায়ী শাকিল মোবাইল ফোনে বলেন, ওই এলাকায় আমার আর মাটির পয়েন্ট নাই। চকজোড়া গ্রামে পয়েন্ট ছিলো। ঈদের আগেই মাটি উত্তোলন শেষ করে সব পয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছি।
সাজাপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, মাটি ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ। আমাদের ক্ষতি হলেও এদের বিরুদ্ধে কথা বলা সম্ভব না। মহাসড়কের ফটকি সেতু থেকে চকজোড়া গ্রামের ভিতরের প্রায় ৪কিলোমিটার পাকা সড়ক ভেঙে একাকার করেছে শুধু মাটি বহনের ট্রাক।
মাদলা ইউনিয়নের মালিপাড়া চাপড়িবিল এলাকায় মাটি উত্তোলন করছেন নুর আলম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি(নুর আলম), হুরায়রা, রাসেল, মিন্টু, জেমস সহ কয়েকজন মাটি উত্তোলন করছিলাম। লাভ না হওয়ায় তা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন রাত ১২টার পর থেকে পয়েন্ট চালু হয়ে পরদিন সকাল পর্যন্ত চলে।
খোট্রাপাড়া ইউনিয়নের খোট্রাপাড়া মাদরাসা পাড়া গ্রামে মাটি উত্তোলন করছেন রায়হানুল হক দুলাল শুভ। খোট্রাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল ফারুখ এর আত্বিয় পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে শুভ বলেন, আমি নিজের জমি কেটে পুকুর করছি।
এই পয়েন্টের আশপাশে আরো অন্তত ৫টি মাটির পয়েন্ট রয়েছে।
একই অবস্থা দেখা গেছে আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর, বিরহামপুর গ্রামে। খড়না ইউনিয়নের খড়না ফকিরপাড়া এবং বীরগ্রাম এলাকায়।
মাটি উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্থ্য বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, একজমিতে মাটি উত্তোলন করলে পাশর জমিতে আর ধান হয় না। পাকা সড়কের পাশ থেকে মাটি উত্তোলন করায় বিভিন্ন জায়গায় সড়ক ভেঙে গেছে। মাটি উত্তোলন বন্ধে এসকেভেটর মেশিন জব্দ সহ বন্ধ রয়েছে এমন পয়েন্ট গুলোতে নিয়মিত মামলা দিলে আমরা রক্ষা পাবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) জান্নাতুল নাইম মোবাইল ফোনে বলেন, আমি নতুন এসেছি। অবৈধ ভাবে মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবো।