সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নবজাতক শিশুকে চুরি করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সোনারগাঁ পৌরসভার উদ্ধবগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত সোনারগাঁ মডার্ন ডায়াগনষ্টিক হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে চুরি হওয়া নবজাতক শিশুর মা আকলিমা বেগম ওরফে রাজিয়া বাদী হয়ে গতকাল রবিবার সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় সালমা বেগম নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উপজেলার হাড়িয়া এলাকা থেকে ওই নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ভূক্তভোগী নারী জানান, রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থানার দৌলদিয়া পতিতালয়ের পূর্বপাড়া এলাকায় থাকার সুবাদে তার সাথে যৌনকর্মী লক্ষী (২৬) নামের এক নারীর সাথে পরিচয় হয়। এদিকে রাজিয়া অন্তসত্বা হলে তার স্বামী মিজানের সাথে সন্তানের ভরন পোষনের খরচ না দেয়া নিয়ে পারিবারিক বিরোধ সৃষ্টি হয়। এনিয়ে বিষয়টি আদালতে মামলা পর্যন্ত এ গড়ায়।
এদিকে পতিতালয়ের যৌনকর্মী লক্ষী ও তার সহযোগি ৫/৬ জন তাকে ভালো হাসপাতালে ভর্তি করবে বলে গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসে। পরে তাকে তিনজন লোকের মাধ্যমে হাতবদল করে অজ্ঞাত লোকদের কাছে রেখে যৌনকর্মী লক্ষী আত্মগোপনে চলে যায়। ওই অজ্ঞাত ব্যাক্তি গত ৪ অক্টোবর দুপুরে সোনারগাঁ মডার্ন ডায়াগনষ্টিক হাসপাতালে ভর্তি করে।
গত ১৪ অক্টোবর জোরপূর্বক তাকে সিজার করলে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। এদিকে সিজারের পর রাজিয়ার জ্ঞান ফিরলে তিনি তার নবজাতক শিশুকে দেখতে চাইলে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান। অথচ ওই হাসপাতালে এ ধরণের কোনো সেবা নেই। এদিকে চারদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ১৮ অক্টোবর নবজাতক শিশু চুরি যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন।
একপর্যায়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছে বলে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়েছে বলে জানায়। এসময় ওই নারী টাকা ফেরত দিয়ে দিলে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে তাকে মিথ্যা মামলা দিবে বলে ভয়ভীতি ও প্রাননাশের হুমকি দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে ওই নারী সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ মডার্ন ডায়াগনষ্টিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল ইসলাম অভিযোগে সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, নবজাতক শিশু চুরি হওয়ায় বিষয়টি জানতে পেরে আমরা খোঁজ নেই। পরে জানতে পারি সালমা নামের এক নারী ওই নবজাতককে দত্তক নিয়েছে এবং দত্তক নেয়ার দলিলাদির ফটোকপি তার কাছে রয়েছে বলে দাবী করেন তিনি। তবে ডকুমেন্ট দেখতে চাইলে তিনি দুরে অবস্থান করছেন বলে জানান।
সোনারগাঁ থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) ওলিয়ার রহমান জানান, সালমা আক্তার নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে উপজেলার হাড়িয়া এলাকা মনারবাগ এলাকার ঝোপ থেকে ওই নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।