সকাল বিডি টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জাইদ্যেরগাঁও এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ডাকাত আখ্যায়িত করে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) ভোররাতে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে মো. সাব্বিরকে (৩০) ধরে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাসীর অভিযোগ, মানসিক প্রতিবন্ধী মো. সাব্বিরকে (৩০) পিটিয়ে জসিম তার প্রতিপক্ষের লোকজনকে ডাকাত দলের সদস্য হিসেবে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্ধী নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ওই প্রতিবন্ধী যুবক প্রাণ বাঁচাতে জসিমের কথা স্বীকার করে নিজেকে ডাকাত দলের সদস্য বলে পরিচয় দেন এবং পরিকল্পভাবে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের নাম বাধ্য হয়।
খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানার এসআই আব্দুল জলিলসহ একদল পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে যুবকটিকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
এদিকে, যুবকটির নিজ গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- সাব্বির আসলে একজন মানসিক রোগী। এর আগে তিনি মোগরাপাড়ার আলাপদী এলাকায় মন্দিরের মূর্তি ভেঙ্গে জনরোষে পড়েছিলেন। গতকাল সাব্বির রাতে বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তাকে জোড় করে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে পিটিয়ে আহত করে ডাকাত আখ্যা দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে এলাকাবাসী ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায় সে আসলে ডাকাত নয় মানসিক প্রতিবন্ধি।
উল্লেখ্য, এর আগেও দড়িকান্দি এলাকার জুয়েল নামে এক যুবককে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর অভিযোগ আছে জসিমের বিরুদ্ধে। এক সময় জাইদ্যেরগাঁও এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা জসিম নিজেকে সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজমের ঘনিষ্ঠ লোক বলে পরিচয় দিয়ে এলাকার নিরীহ লোজনের জমি-জমা দখলসহ ত্রাসের রাজত্য কায়েম করতো।
কিন্তু ৫ আগষ্টের পর হঠাৎ করেই ভোল পাল্টে বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া শুরু করেন ও এলাকায় বিএনপি নেতাদের বাড়িঘরে হামলা এবং তার বিরোধীতাকারীদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন।
অভিযুক্ত জসিম ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টাসহ ১৪টি মামলা ও অভিযোগ আছে, যেগুলোর অনেকগুলি এখনো আদালতে এখনো বিচারাধীন আছে।
এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানার ওসি এম এ বারী বলেন, ডাকাতির অভিযোগে আটক যুবকটিকে আসলে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে ডাকাত আখ্যায়িত করে এলাকার কিছু লোকজন পিটিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।