আওয়ামীলীগের বর্বরতার জন্যই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন হয়েছে: ভিপি নুর

সকালবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি নূরুল হক নূর বলেছেন, আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছরে বিচারবহির্ভূতভাবে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের বিপক্ষে কথা বলতে গিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে গুম, হত্যা, হামলা ও মামলার শিকার হতে হয়েছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান এভাবে আসেনি। গণতান্ত্রিক মুক্তিকামী মানুষ, ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটানোর জন্য দেড় বছর লড়াই, সংগ্রাম করতে হয়েছে।

শনিবার বিকালে সোনারগাঁ পৌরসভা কার্যালয় মাঠে উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আয়োজনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনআকাঙ্ক্ষার রাজনীতি’ শীর্ষক আলাচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের নামে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল। গুম খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। নির্যাতন, চাঁদাবাজি, লুটপাট এমনকি বইয়ে পড়েছি ওই সরকারের মন্ত্রিসভার এক মন্ত্রী টঙ্গীর ওপর দিয়ে বউ নিয়ে যাওয়ার সময় বউ ছিনতাই করেছিল। পরে ধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই ৭৫-এর বর্বরতা ও নির্মমতা দেখিনি। আমরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের নির্মমতা দেখেছি। রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে এক দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে তারা।

ভিপি নূর আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বর্বরতার জন্যই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান প্রয়োজন হিসেবে দেখা দিয়েছিল। এ গণঅভ্যুত্থানের জন্য হাজার হাজার তরুণ প্রাণ দিয়েছে। তাদের প্রাণের বিনিময়ে এ দেশে পরিবর্তন এসেছে। এ পরিবর্তন স্থায়ী করার জন্য নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পর দেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ৫ বছর পর পর ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে; কিন্তু জনগণের কোনো প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

অনুষ্ঠানে ভিপি নূর আরও বলেন, সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদীকে কেন্দ্র করে দুপাশে গড়ে উঠা কোম্পানিতে দখলবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ করেছে। এখন কি বন্ধ হয়েছে? এখন আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। এখন কারা করেছে? বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে নতুন রাজনীতি ও নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। নতুন রাজনীতি তৈরি করতে না পারলে জনগণ সেই আগের মতোই ভোগান্তিতে পড়বে।

তিনি বলেন, আশা করি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করবে। এ নির্বাচনে চাঁদাবাজ, মাফিয়া ও ডনদের আপনারা ভোট দেবেন না। নতুন নেতৃত্ব তৈরি করবেন। না হলে গণঅভ্যুত্থান বেহাত ও বিপথে পরিণত হবে।

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি মো. ওয়াহিদুর রহমান মিল্কির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তোফাজ্জল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, নারায়ণগঞ্জ গণঅধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ, নারায়ণগঞ্জ গণঅধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আরিফ ভূঁইয়া, ছাত্র অধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. মহিবুল্লাহ প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: Content is protected !!