নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মানুষ ভবিষ্যতের দুঃশ্চিন্তা থেকে দাজ্জালের ফেতনারই একটি অংশ জীবন বীমা নামক এই জগন্য পাপে জড়াচ্ছে- মাসুম সাউদ
বর্তমান সময়ে দেখি আমাদের আশেপাশের মানুষগুলো ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক ফিকির করে।তাদের ফিকির হলো আমি মারা গেলে আমার পরিবারের কি হবে?দূর্ঘটনা ঘটলে আমার পন্যের কি হবে?
সেইসব চিন্তা থেকে জীবন বীমা বা আরও অন্যসব বীমা করে।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে জীবন বীমার বৈধ্যতা কি একজন প্রকৃত মুসলিম পেয়েছে?
উত্তরঃ না, শরীয়তের দৃষ্টিতে এটা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও হারাম একটি লেনদেন। “আর্ন্তজাতিক ফিকহ একাডেমি” এবং সৌদীআরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা “উচ্চ উলামা পরিষদ” সহ দেশবিশ্বের নির্ভরযোগ্য সকল প্রতিষ্ঠান ও অধিকাংশ ফকীহ এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, সকল ধরণের বানিজ্য বীমাই হারাম। চাই তা সম্পদের বীমা হোক বা জীবনের বীমা। উলামায়ে কিরাম এর একাধিক কারণ উল্লেখ করেছেন।এর মধ্যে প্রধান কারন হচ্ছে এতে সুস্পষ্ট সুদ পাওয়া যায়। যেহেতু এতে যে পরিমাণ অর্থ জমা দেওয়া হয় বিনিময়ে তার চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণ করা হয়। আর শরীয়তের পরিভাষায় সরাসরি আর্থিক লেনদেনে কমবেশি মুনাফা চুক্তিকেই তো সুদ বলা হয়।
আর পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ তায়ালা পরিষ্কার ভাষায় সুদ হারাম ঘোষণা করেছেন।পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারাহ’র ২৭৫ নাম্বারে স্পষ্ট করে বলা আছেঃ-আর আল্লাহ্ ক্রয়-বিক্রয় তথা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন।’
আবার দেখেন এতে ধোকা ও ঝুঁকি বিদ্যমান। যেহেতু বীমাকারী নিজেই জানা নেই যে, সে কী পরিমাণ অর্থ দিবে আর কী পরিমাণ গ্রহণ করবে? এমনও হতে পারে যে, বীমা করার কিছুদিনের মধ্যেই সে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হলো। তখন বীমা প্রতিষ্ঠান চুক্তির শর্তানুযায়ী বিশাল অর্থ দিতে বাধ্য হবে। আবার এমনও হতে পারে যে, সারাজীবন তার কোনো দুর্ঘটনাই ঘটলো না। তাহলে এক্ষেত্রেও বীমাকারীকে সকল কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। অথচ সে জীবিত অবস্থায় এর কিছুই পাবে না; বরং মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশরা পাবে।
এমনকি এতে জুয়াও বিদ্যমান। যেহেতু বীমাকারী কখন মারা যাবে আর সে কতো টাকা পাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর শরীয়তের পরিভাষায় অনিশ্চিত লেনদেনকেই জুয়া বলে।আর মহান আল্লাহ্ তায়ালা জুয়াকে শয়তানের কর্ম বলে অভিহিত করেছেন এবং এ থেকে আমাদের বিরত থাকার আদেশ করেছেন।
আর সবচেয়ে ভয়াবহ এতে জুলুম পাওয়া যায়। যেহেতু কোনো বীমাকারী প্রয়োজনবশতঃ হলেও কিস্তি দিতে অপারগ হওয়ায় এটা বাতিল করতে চাইলে প্রতিষ্ঠান তার সমুদয় অর্থ রেখে দেয়, যা সুস্পষ্ট জুলুম ও অমানবিক।এখানে আবার মানুষকে বিক্রয়লদ্ধ পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেহেতেু এতে মানুষের মৃত্যু বা দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে চুক্তি করা হয়, সেহেতু এতে মানুষকে একপ্রকার পণ্য হিসেবে মূল্যায়িত করা হয়। অথচ মানুষ সম্মান ও মর্যাদাসম্পন্ন এক জাতি, যা কিছুতেই বিক্রয়যোগ্য হতে পারে না।
আমি সাধারন মুসলিম।আমার রিসার্চে ও আমার জ্ঞানে এতটুকুই আমি জানি।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে, যার কারণে উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতভাবে এটাকে নাজায়েজ ও হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছেন। মূল কথা হলো, মানুষের রিযিকের দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর হাতে। এ কথার উপর সকল মুমিনের বিশ্বাস রাখা একান্ত জরুরি এর বিপরীত লাইফ ইন্সুরেন্সের মাধ্যমে মৃত্যু পরবর্তী পরিবার খুব ভালোভাবে চলতে পারবে এ দৃঢ় বিশ্বাস অন্তরে লালন করে এ রকম হারাম একটি ব্যবস্থাপনা করে যাওয়া শুধু গোনাহই না; বরং শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তাই এ থেকে সবার সচেতন থাকা একান্ত জরুরি।
জাজাকাল্লাহ খাইরান।