জামাল ও তপুর গোলে মালদ্বীপকে ১৮ বছর পর হারিয়ে দীর্ঘ ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙেছে বাংলাদেশ। সেই সাথে “সোনার হরিণের” দেখা পেলেন জামাল ভূঁইয়া।
রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবেই মূলত খেলেন তিনি। আক্রমণে সহায়তার চেয়ে রক্ষণের দিকেই মনোযোগ বেশি। তাই বলে গোল করতে তো কোনো বাধা নেই।
কিন্তু ২০১৩ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর জামাল ভূঁইয়ার নামের পাশে কিনা এত দিন কোনো আন্তর্জাতিক গোল ছিল না! অবশেষে দীর্ঘ ৮ বছর পর সেই ‘সোনার হরিণ’-এর দেখা পেলেন ৩১ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
আজ শ্রীলঙ্কার চার জাতি টুর্নামেন্টে মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২-১ গোলে জয়ে প্রথম গোলটি জামালের। থ্রো থেকে দুদলের খেলোয়াড়েরাই লাফিয়ে ওঠেন বলের জন্য। কিন্তু কেউই বল পাননি।
বল পেলেন ফাঁকায় দাঁড়ানো জামাল। তাঁর আলতো টোকায় বলের ঠিকানা হয়েছে জালে। জামাল গোললাইনে ৩-৪ হাত সামনে বল পেয়েছেন। সেখান থেকে চাইলেও বাইরে মারা সম্ভব ছিল না।
জাতীয় দলের জার্সিতে জামালের ম্যাচসংখ্যা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে। কোথাও বলা হচ্ছে তিনি ৫৮ ম্যাচ খেলেছেন, কোথাও আবার ৫৯ ম্যাচ। মোট ম্যাচ ৫৮ বা ৫৯ যা–ই হোক না কেন, জাতীয় দলের জার্সিতে ৮ বছর অপেক্ষার পর অভিষেক গোল পেয়ে জামালের গর্বিতই হওয়ার কথা।
২০১৮ জাকার্তা এশিয়ান গেমসে কাতারের বিপক্ষে গোল করেছিলেন জামাল। সেই গোলে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ওঠে এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় রাউন্ডে। সেই গোলটি অবশ্য অনূর্ধ্ব-২৩ দলের জার্সিতে ছিল।
মালদ্বীপকে ১৮ বছর পর হারিয়ে বাংলাদেশ আজ দীর্ঘ ব্যর্থতার একটি বৃত্ত ভেঙেছে। ম্যাচ শেষে কোচ মারিও লেসোস এর কৃতিত্ব দিয়েছেন ফুটবলারদের। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা ওদের হারাতে পারিনি ১৮ বছর। আজ হারাতে পেরে অবশ্যই ভালো লাগছে। খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দেব, আজ ওদের আনন্দের দিন। ফুটবলে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। কখনো জয়, কখনো হার। আজকের দিনটি আমাদের জন্য বিশেষ কিছু। আজ ড্র হলেও সুযোগ থাকত আমাদের। তবে আমরা জিতেছি।’
মালদ্বীপের মতো দলের বিপক্ষে জেতা সহজ নয় জানিয়ে বাংলাদেশ কোচের সংযোজন, ‘প্রথমার্ধে আমরা একটা ভুল করেছি। একটা গোল খেয়েছি। দ্বিতীয়ার্ধে ছেলেদের বলেছি, কোনোভাবে ভুল করা যাবে না। আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। মালদ্বীপের বল পজেশন বেশি ছিল। ওরা আমাদের সীমানায় আসছিল। আলী আশফাক বেশি জায়গা পেলে অনেক কিছু করতে পারত। আমরা সেটা ওকে করতে দিইনি। মাঠের মাঝ অঞ্চলে ওদের সংগঠিত হয়ে খেলতে দিইনি। এটা আমাদের কাজে এসেছে।’
আবাহনীকে এএফসি কাপের আন্ত আঞ্চলিক সেমিফাইনালে তোলেন তরুণ পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস। আজ মালদ্বীপকে হারিয়েছেন। সব ম্যাচ জিততে চান জানিয়ে জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের কথা, ‘সব সময় কিন্তু জেতা সম্ভব নয়। তবে আমি চাই আমার দল জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ুক। সেটা ক্লাব আর জাতীয় দল যা–ই হোক না কেন।’
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। সে ম্যাচে ড্র করলেই বাংলাদেশ ফাইনালে উঠে যাওয়ার কথা। শেষ ম্যাচ নিয়ে লেমোস বলছেন, ‘ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা উজ্জীবিত হয়ে খেলবে আমাদের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ওরা ৪ গোল খেয়ে ৪ গোল দিয়েছে। ওদের আমরা সম্মান করি এবং অবশ্যই ফাইনালে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’