সকালবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার এক সপ্তাহ পর আহত আব্দুল করিম (৬৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বুধবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে আব্দুল করিম মারা যায়।
নিহত আব্দুল করিম সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের সেনপাড়া গ্রামের মৃত ইছমত সরকারের ছোট ছেলে। এ ঘটনার পর থেকে পুরো বারদী এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের বারদী বাজার এলাকায় নির্বাচন কেন্দ্রিক বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার করতে সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হকের সমর্থক নাজমুল হক গ্রুপের সাথে বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুলের সমর্থক জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবু গ্রুপের বিরোধ চলছে। এ বিরোধের জের ধরে গত ১৩ এপ্রিল বুধবার সকালে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয় এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একদিন পর উভয় গ্রুপ সোনারগাঁও থানায় পাল্টা পাল্টি মামলা দায়ের করে।
লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল চেয়ারম্যানের সমর্থক মারাত্মকভাবে আহত আব্দুল করিম গতকাল বিকেলে মারা যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তে বারদী বাজারে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জাকির সরকার ও ইব্রাহিম ইবু এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত জহির চেয়ারম্যান ও তার সমর্থক নাজমুল সহ সকল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবী করেন।
নিহত আব্দুল করিমের ছেলে বাছেদ জানান, ১৩ এপ্রিল নাজমুল হক, আলী মিয়া ও দাইয়ান সরকারের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একদল সন্ত্রাসী আমাদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে তারা লোহার বড় ও চাপাতি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে, আমার ভাই সাদেকের হাত ভেঙ্গে ফেলে এবং ছোট রাজীনের শরীরে উপযুপরি আঘাত করতে থাকলে আমার বাবা আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসে। এ সময় সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে মারধরের পর উপরে তুলে আছাড় মারলে বাবার কোমর ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়। আমার মাথায় ১৩ টি সেলাই করা হয়েছে। সাতদিন তিনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আজ বিকেলে মারা যান।
অভিযুক্ত নাজমুল হক জানান, আব্দুল করিম দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারনে মারা গেলেও প্রতিপক্ষ আমাদের ফাসাতে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ময়নাতদন্ত রির্পোট আসলেই সত্য ঘটনা জানা যাবে এই ঘটনায় আমরা নির্দোষ।
সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, আব্দুল করিম নামে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে। এ ঘটনায় যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।