মোস্তাফিজুর রহমান বাবু | সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ সিলেটের সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক শুক্কুর আলীর মাধ্যমে সীমান্তে মদ, গাঁজা হিরোইনসহ নারী পাচারের মতো বড় ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত হলেও দেখার যেন কেউ নেই।
এই ঘটনায় উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের মো. আক্কাছ আলীর ছেলে মো. রোমান মিয়া তাহিরপুরে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক শুক্কুর আলীকে অভিযুক্ত করে গত ১২ই মে পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায় সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানার মধ্য তাহিরপুর গ্রামে ভিনদেশী ভারতীয় পশ্চিম বঙ্গের কলকাতার নাগরিক হিসেবে মো. শুক্কুর আলী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছেন। তাহিরপুর থানার লোকজন তাকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নাগরিক হিসেবে চিনেন। সে থানার একেবারেই কাছে একটি বাড়িতে বসবাস করে আসছেন ফলে থানা পুলিশের সাথে তার একটা সুসর্ম্পক রয়েছে । সে অন্য একজন নাগরিকের নামে যশোর জেলার বেনাপুল পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন কার্ড সংগ্রহ করে তাহিরপুর উপজেলার মধ্য তাহিরপুরে বসবাস করে আসছেন। তিনি সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় থেকে প্রতিনিয়ত গভীর রাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় মদ, গাঁজা ফেনসিডিল, হিরোইন ও ইয়াবার চালান বাংলাদেশে নির্বিঘ্নে নিয়ে আসছেন। পরবর্তীতে এই অবৈধ নেশা জাতীয় দ্রব্য একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্নস্থানে পাচার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।স্থানীয়রা অনেকেই তাকে প্রশাসনের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে কেউ মুখ খুলে কোন কিছু বলার সাহস পান না।
অনেকেই তাকে তাহিরপুর থানার এস আই গোলাম হক্কানির ব্যক্তিগত সোর্স হিসেবেই ভারতীয় নাগরিক শুক্কুর আলীকে জানেন। প্রায় সময়ই এস আই গোলাম হক্কানি কে নিয়ে তাহার মোটর সাইকেল দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ড্রাইভিং করে অবৈধ নাগরিক শুকুর আলী। তাহার কাছে যশোর জেলার বেনাপোল পৌরসভার একটি জন্ম নিবন্ধন কার্ড আছে অথচ উক্ত জন্ম নিবন্ধন কার্ড এর বিষয়ে বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশ্ররাফুল আলম লিটনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন শুকুর আলী নামধারী ব্যক্তি টি ভারতে নাগরিক ঠিক । কিন্তু একটি দালাল চক্র অসৎ উপায় অবলম্বন করে এই কার্ড টি করেছে আমি এই জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি বাতিল করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে তিনি নিশ্চিত করে স্বীকার করেন যে শুকুর আলী কলকাতার বনগাঁও এলাকার নাগরিক। বর্নিত শুকুর আলীর মা বাবা ভাই বোন পিতৃ পরিচয় বাংলাদেশের কোন জায়গায় নাই। এমন কি তাহার পাসপোর্ট, ভিসা, এনআইডি কার্ড কোন কিছুই নাই। এই অবৈধ লোকের অসামাজিক কার্যকলাপ মাদক বাণিজ্য এভাবে চলতে থাকলে তাহিরপুর,সুনামগঞ্জ জেলার যুব সমাজ দিন দিন মাদকাসক্ত হয়ে বিপদগামিহচ্ছেন বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তাহিরপুরের সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক শুক্কুর আলীর বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবরের অনুলিপিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি, ডিআইজি সিলেট ,ডিএসবি সুনামগঞ্জ বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী রোমান মিয়া মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের জানান আমার অভিযোগের কপি তাহিরপুর থানায় আসার পর তদন্ত করার জন্য বিধি মোতাবেক আমাকে নোটিশ না করে ইন্ডিয়ান এই অবৈধ নাগরিকের পক্ষে বেআইনি ভাবে অবলম্বন করে থানার এস আই গোলাম হক্কানি ও পুলিশ কনস্টেবল আদিল মাহমুদ কর্তৃক গত ৩০/০৫/২০২২ ইং তারিখে সন্ধ্যার সময় মোবাইল ফোনে তাকে স্বপরিবারে মামলা মোকদ্দমায় অর্ন্তভূক্ত করার ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলে জানান। বর্তমানে তিনি থানার এস আইয়ের হুমকি, দামকী, হয়রানী ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ তরফদার পুলিশ সুপারের নিকট ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই নাগরিকের বিষয়টি অনুসন্ধান চলছে। তবে থানার এস আই গোলাম হক্কানির সাথে ভারতীয় নাগরিকের সখ্যতার বিষয়টি জানা নেই বলে জানান তিনি।