ঢাকায় মনোনয়নপত্র নিতে আসা বিএনপির যশোর জেলার সহ-সভাপতি ও কেশবপুরের মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিকির (৬৫) লাশ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাওয়া গেছে। গত ১৮ নভেম্বর রোববার পুরনো পল্টনের একটি হোটেল থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় হিসাবে তার লাশ সোমবার রাতে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে রেখে যায়। আবু বকরের ভাতিজা সুমন গতকাল সন্ধ্যায় মর্গে লাশটি তার চাচার বলে সনাক্ত করেন।
পুলিশ হাসপাতাল সুত্র ও নিহতের স্বজনরা জানিয়েছে, আবু বকর সিদ্দিক যশোর-৬ সংসদীয় আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন লাভের চেষ্টা করছিলেন। সে অনুযায়ী গত শনিবার তিনি কয়েকজন দলীয় নেতা-কর্মীসহ পুরানা পল্টনের হোটেল মেট্রপলিটনে ওঠেন। রোববার রাত ৮ টার দিকে তিনি তার ব্রীফকেসসহ হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। এর ঘন্টাখানেকপর তিনি তার ভাতিজা সুমনকে ফোন করে জানান, ‘ তাকে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে সম্ভবত রমনা পার্ক এলাকায় নেয়া হচ্ছে এবং টাকা না দিলে হত্যা করা হতে পারে। অপহরনকারীদের দাবী মোতাবেক পরিবারের সদস্যরা একটি বিকাশ নম্বরে দেড় লাখ টাকা প্রদান করেন। পরে তারা আরো ৫০ হাজার টাকা দাবী করলে ২০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু দুদফায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা বিকাশ করার পরও অপহরনকারী তাকে ছাড়েনি। এমনকি এরপর থেকে তার কোন খোঁজও পাওয়া যায়নি। ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়
আত্মীয়-স্বজন এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তাকে উদ্ধারে কোন তৎপরতা দেখায়নি। ঘটনার ৪দিন পর মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে তার লাশ পাওয়া যায়। কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ সকাল বিডি24 কে জানিয়েছেন, আবু বকর সিদ্দিক বিএনপির শুরু থেকেই দলের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। তিনি ২০০১ সাল পর্যন্ত কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে যশোর জেলার সহ-সভাপতি। তিনি একজন জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
দক্ষিণ-কেরানীগঞ্জ থানার ওসি শাহ জামান ঘটনার দিন জানিয়েছিলেন, গত ১৯ তারিখ সোমবার বেলা ১ টার দিকে বুড়িগঙ্গার চর-খেজুরবাগ বেবী সাহেব ডগইয়ার্ড সংলগ্ন পানি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরনে ছিলো সাদা পাজামা ও গেঞ্জি। ওই সময় পুলিশ লাশটিকে অজ্ঞাত হিসাবে উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পুলিশের ধারনা ছিলো কোন নৌযান থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হতে পারে।