৭টি দাবি ও ১১টি লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা শুরু
বিএনপি, ঐক্য প্রক্রিয়া, নাগরিক ঐক্য ও জেএসডি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এর ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, জাতির প্রয়োজনেই এ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ।
ড. কামালের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর এই জোটের নামকরণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য পাঠ করেন তিনি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি :
১) অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।
২) গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
৩) বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সকল রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪) কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যম স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহ সকল কালো আইন বাতিল করতে হবে।
৫) নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত করতে হবে।
৬) নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনা স্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশের উপর কোন প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উপর যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।
৭) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও কোনো ধরনের নতুন মামলা না দেয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।