খুব অল্পতেই ক্লান্ত লাগছে আপনার? কোনো কাজে ঠিকঠাক মনোযোগ দিতে পারছেন না? কিংবা কয়েকটি সিড়ি ওঠার পরেই দম বন্ধ হয়ে আসছে? বন্ধুদের কেউ কেউ প্রায়ই বলছে, ‘তোকে আজকাল বড্ড ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে’!
যদি এমন হয়ে থাকে, তবে নিশ্চিত করেই বলা যায়; আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রন বা লৌহের অভাব রয়েছে। আপনি হয়তো অজান্তেই ‘আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানেমিয়া’ নামক রোগে ভুগছেন। আর এটাই বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত পুষ্টিহীনতা জাতীয় রোগ।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, আলসেমির অন্যতম কারণ কিন্তু শরীরে আয়রনের অভাব। বিশেষ করে তরুণীদের।
যুক্তরাজ্যের সায়েন্টিফিক অ্যাডফাইসরি কমিটি ফর নিউট্রিশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ২১ ভাগ মহিলারই পর্যাপ্ত আয়রনের অভাব রয়েছে। এর অভাবেই মানুষ রক্ত স্বল্পতায় ভোগে।
কোথায় পাবেন আয়রন?
আমাদের শরীর তো আর নিজে নিজেই আয়রন উৎপাদন করতে পারে না। তাই আয়রনের অভাব দূর করতে আপনার দৈনন্দিন খাবার তালিকাতেই আয়রন থাকা চাই। কিছু খাবারে প্রাকৃতিকভাবেই আয়রন থাকে।
যেমন: আয়রনের ঘাটতি মেটাতে প্রাণীজ আমিষ বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। মাংসের কলিজা, ডিমের কুসুম এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে।
লন্ডনের কিংস কলেজের পুষ্টি বিজ্ঞানী অধ্যাপক পল শার্প প্রাকৃতিকভাবেই যে খাবারগুলোতে আয়রন আছে সেগুলোর প্রতি জোর দিয়েছেন।রেড মিট যেমন, গরু, খাসীর মাংসে প্রচুর আয়রন থাকে।
এছাড়া গাঢ় সবুজ রঙের শাক সবজিগুলোও আয়রনের অফুরন্ত আঁধার। আয়রন রয়েছে এমন কিছু খাবার হলো-
১। কচু শাক
২। কাঁচকলা
৩। তরমুজ
৪। ফুলকপি
৫। পেয়ারা, আমলকি ও কমলা ইত্যাদি
কিসের সাথে কী খাবেন?
কিন্তু ব্যাপার হলো, আপনি কীভাবে খাবারটি প্রস্তুত করছেন বা কোন খাবারের সাথে খাচ্ছেন তার উপরও নির্ভর করে আপনি কতটুকু আয়রন পাচ্ছেন।
অধ্যাপক পল শার্প বলেন, সকালের নাস্তায় শস্য জাতীয় খাবারের সাথে এক গ্লাস কমলালেবুর জুস খেলে অনেক বেশি পরিমাণ আয়রন পাওয়া যায়। কেননা, কমলা লেবুতে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। যা খাবারের ভেতর থেকে আয়রন তৈরিতে সহায়তা করে।
সেই একই খাবারের সাথে যদি কমলা লেবুর বদলে কফি খাওয়া যায় তাহলে খুব অল্প পরিমাণ আয়রন পাওয়া যায়। কফিতে পলিফেনন নামে এক ধরণের রাসায়নিক দ্রব্য আছে। যা শরীরে আয়রন তৈরিতে বাধা দেয়।
মসুরের ডাল, পালং শাক, গরুর মাংস, মুরগী অথবা ছোলা এগুলি খেলেই আপনার প্রয়োজনীয় আয়রন আপনি পেয়ে যাবেন।
আয়রনের অভাবের যেমন সমস্যা আছে, আয়রনের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়ে গেলেও সমস্যা।
অতিরিক্ত আয়রন শরীরের ভিতরের কোন অংশ নষ্ট করে দিতে পারে অনেক সময়। এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক এবং ক্যানসার ঝুঁকি বাড়ায়।
আপনার যতটুকু আয়রন দরকার? সেই চাহিদাটুকু পূরণ করার চেষ্টা করুন
প্রকাশক তানজির আহম্মেদ সানি তপদার