সুমনা আক্তার আঁখি, কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধিঃ
পরিক্ষার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো ফল পাননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত সাত কলেজের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রাণীবিদ্যা এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। কলেজের নীতিমালা অনুসারে যেখানে আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফল দেওয়ার কথা।
এদিকে ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত, অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহনেচ্ছু শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণ করতে বলা হয়েছে। প্রথম বর্ষের ফল বের হওয়ার আগেই দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণে বিভ্রান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো: বাহালুল হক স্বাক্ষরিত ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ মাসের ১৬ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে অনলাইনে ফরম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট কলেজে জমা দিতে হবে। ফলে হতাশায় তড়িঘড়ি করছে শিক্ষার্থীরা। বেধেছে আরেক বিপত্তি। অনলাইন ফরমে নেই সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সবগুলো বিষয়। একের পর এক ঝামেলায় পড়ে হয়রানির শিকার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে যেখানে সংশয় সেখানে এতো তাড়াহুড়ো করে দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণের নোটিশে উদগ্রীব শিক্ষার্থীরা।
ইডেন কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিনা হক বলেন, আমাদের প্রথম বর্ষের ফলাফলই এখনো জানানো হয়নি।
২০১৯ সালে ১ম বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছি। আমি এখন পযর্ন্ত নিশ্চিত না আমি কোন বর্ষে আছি। অথচ দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণের জন্য বলা হয়েছে। কি করবো বুঝতে পারছি না? দ্বিধান্বিত অবস্থায় আছি। অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে সাত কলেজে পড়াশুনা করছি।
শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজকে (ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ,শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার পর থেকে সমস্যা যেন ক্রমান্বয়ে আরো বেড়েই চলেছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন। সেশনজট, ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা এবং ফলাফল বিপর্যয় সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্রধান সমস্যা। অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফল বিপর্যয় যেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরীক্ষা দেয়ার ১ বছর ৪ মাস পরে রসায়ন বিভাগের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে গত ২২শে মার্চ। ৪৩.৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে তাতে।
এ বিষয়ে কবি নজরুল কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রেদওয়ান বলেন, ভাল পরীক্ষা দেওয়ার পরেও ফলাফল ভাল হয়নি। কোথায় ঘাটতি আছে জানা নেই। তবে এটা আমার একার নয়, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের একই অবস্থা। সবাই গণহারে অকৃতকার্য হয়েছে। ১৪ মাস পর ফলাফল পেয়েছি। এতোদিন দ্বিতীয় বর্ষের জন্য পড়াশুনা করেছি। কিন্তু এখন জানতে পারলাম অকৃতকার্য হয়েছি। এই মুহূর্তে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
ফলাফল প্রকাশের বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ সাত কলেজের সমন্বয়কারী অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার জানান, প্রায় সকল বিষয়ের ফলাফল প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি বিভাগের বাকি আছে তা কিছু দিনের মধ্যেই প্রকাশ হবে। তিনি আরো বলেন, সাত কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে বৃহত্তর পরিসরে কাজ চলছে। করনাকালীন যে সংকট আছে সেটা উত্তরণের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেছি। অনেক গুলো ভাল পরিকল্পনা রয়েছে।